ভাষাসৈনিক প্রিন্সিপাল আশরাফ হোসাইন ফারুকী আর নেই

প্রিন্সিপাল আশরাফ হোসাইন ফারুকী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, তমদ্দুন মজলিস কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ভাষাসৈনিক প্রিন্সিপাল আশরাফ হোসাইন ফারুকী আর নেই। তিনি ১২ এপ্রিল দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় বার্ধক্যজনিত কারণে জামালপুর সদর উপজেলার তিতপল্লা ইউনিয়নের জামতলি পশ্চিমপাড় দিঘুলি গ্রামে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন ( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। মৃত্যুকালে তিনি রত্নগর্ভা স্ত্রী বেগম সুরাইয়া ফারুকী, ছয় ছেলে ও দুই মেয়েসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৩ এপ্রিল দুপুর ২টায় তার গ্রামের বাড়ি জামতলী বাজারের জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা নামাজ শেষে বাড়ির পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মুরাদ হাসান, সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার বিপুল সংখ্যক মুসল্লি জানাজায় অংশ নেন।

জানাজা নামাজের আগে মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মুরাদ হাসান, সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন, জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর, সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী বিএনপিনেতা মো. সিরাজুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আইনজীবী জাহিদ আনোয়ার, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল হোসেন হোসেন, সরিষাবাড়ী কলেজের অধ্যক্ষ ছরোয়ার জাহান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, তিতপল্লা ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, মরহুমের ছেলে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুজাহিদ বিল্লাহ ফারুকী এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী প্রমুখ।

প্রিন্সিপাল আশরাফ হোসাইন ফারুকী ছিলেন ১৯৪৮ সালে জামালপুর মহকুমা তমদ্দুন মজলিসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীতে তিনি ঢাকায় রাষ্ট্রভাষা বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কেন্দ্রীয় তমদ্দুন মজলিসের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি এ বছর তমদ্দুন মজলিসের মাতৃভাষা পদক পান। তার দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে তিনি ১৯৬৭ সালে সরিষাবাড়ী কলেজের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। এছাড়াও তিনি দেশের বিভিন্ন কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তার ছেলে-মেয়েরা সবাই উচ্চ শিক্ষিত এবং স্ব-পেশায় অধিষ্ঠিত। এ কারণে তার স্ত্রী বেগম সুরাইয়া ফারুকী রত্নগর্ভা পুরস্কারে ভূষিত হন। তার ছেলেদের মধ্যে অধ্যাপক ড. মুজাহিদ বিল্লাহ ফারুকী জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ, মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী কর কমিশনার পদে কর্মরত আছেন।