ঢাকা ০৫:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

সরিষাবাড়ী হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড , ডাক্তারের দূরদর্শিতায় প্রাণে বাঁচল প্রসূতি, নবজাতক

সরিষাবাড়ী : অগ্নিকাণ্ডের সময় সতর্কতার সাথে প্রসূতি ও নবজাতককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচার কক্ষে গর্ভবতী এক নারীর নবজাতক প্রসবের অস্ত্রোপচারের সময় পাশের মালামাল রাখার কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রোগী, ডাক্তার ও নার্সদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাশেদা পারভীন মুন্নীর দূরদর্শিতায় প্রাণে বেঁচে গেছে প্রসূতি নারী ও নবজাতকের।

৩ নভেম্বর, সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। এতে মালামাল রাখার কক্ষে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার দেবাশীষ রাজবংশী এ প্রতিবেদককে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচার কক্ষে একজন গর্ভবর্তী নারীর নবজাতক প্রসবের অস্ত্রোপচার চলছিল। এ সময় বেলা ১১টার দিকে পাশেই মালামাল রাখার কক্ষে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় হাসপাতালে রোগী ও রোগীর স্বজনেরা ভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন। পরবর্তীতে ডাক্তার ও নার্স সবাই মিলে প্রসূতি ও তার নবজাতককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

অস্ত্রোপচার কক্ষে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাশেদা পারভীন মুন্নী এ প্রতিবেদককে বলেন, ৩ নভেম্বর বেলা পৌনে ১১টার দিকে ওই সকল প্রস্তুতি শেশে একজন প্রসূতির দেহে অস্ত্রোপচার শুরু করা হয়। একটি নবজাতক প্রসব করানোর পর বিইরে আগুন আগুন করে সবাই চিৎকার করছে এমনটা শুনতে পাই। অস্ত্রোপচার কক্ষের সবাইকে ধৈর্য ধরে কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলি। এরপর নবজাতককে নার্সের কাছে দিয়ে সাথে আরও একজনসহ বাইরে নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর নবজাতক ও মাকে নিয়ে তারা বের হন। এদিকে চারপাশ কাল ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকায় কৌশলে তারা রোগীকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান।

তিনি আরও বলেন, অস্ত্রোপচার কক্ষের বাইরে তাকিয়ে দেখি শুধু আগুনের ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। বাইরে সবাই দৌড়াদৌড়ি করছে। কাউকে ডেকেও পাওয়া যায়নি। এমন ঘটনার মধ্যে ওই প্রসূতিকে সফলভাবে নবজাতক প্রসব করানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। সবার সহযোগিতায় এটি সম্ভব হয়েছে। নবজাতক ও তার মা এখন সুস্থ রয়েছেন।

উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন মাস্টার শহিদুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় জনসাধারণ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।

এদিকে তাৎক্ষণিক ঘটনারস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহছেন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হয়ে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করছি। সঠিক তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

শেরপুরে ঘর-বাড়ি উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন

সরিষাবাড়ী হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড , ডাক্তারের দূরদর্শিতায় প্রাণে বাঁচল প্রসূতি, নবজাতক

আপডেট সময় ০৯:০৭:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচার কক্ষে গর্ভবতী এক নারীর নবজাতক প্রসবের অস্ত্রোপচারের সময় পাশের মালামাল রাখার কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রোগী, ডাক্তার ও নার্সদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাশেদা পারভীন মুন্নীর দূরদর্শিতায় প্রাণে বেঁচে গেছে প্রসূতি নারী ও নবজাতকের।

৩ নভেম্বর, সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। এতে মালামাল রাখার কক্ষে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার দেবাশীষ রাজবংশী এ প্রতিবেদককে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচার কক্ষে একজন গর্ভবর্তী নারীর নবজাতক প্রসবের অস্ত্রোপচার চলছিল। এ সময় বেলা ১১টার দিকে পাশেই মালামাল রাখার কক্ষে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় হাসপাতালে রোগী ও রোগীর স্বজনেরা ভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন। পরবর্তীতে ডাক্তার ও নার্স সবাই মিলে প্রসূতি ও তার নবজাতককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

অস্ত্রোপচার কক্ষে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাশেদা পারভীন মুন্নী এ প্রতিবেদককে বলেন, ৩ নভেম্বর বেলা পৌনে ১১টার দিকে ওই সকল প্রস্তুতি শেশে একজন প্রসূতির দেহে অস্ত্রোপচার শুরু করা হয়। একটি নবজাতক প্রসব করানোর পর বিইরে আগুন আগুন করে সবাই চিৎকার করছে এমনটা শুনতে পাই। অস্ত্রোপচার কক্ষের সবাইকে ধৈর্য ধরে কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলি। এরপর নবজাতককে নার্সের কাছে দিয়ে সাথে আরও একজনসহ বাইরে নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর নবজাতক ও মাকে নিয়ে তারা বের হন। এদিকে চারপাশ কাল ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকায় কৌশলে তারা রোগীকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান।

তিনি আরও বলেন, অস্ত্রোপচার কক্ষের বাইরে তাকিয়ে দেখি শুধু আগুনের ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। বাইরে সবাই দৌড়াদৌড়ি করছে। কাউকে ডেকেও পাওয়া যায়নি। এমন ঘটনার মধ্যে ওই প্রসূতিকে সফলভাবে নবজাতক প্রসব করানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। সবার সহযোগিতায় এটি সম্ভব হয়েছে। নবজাতক ও তার মা এখন সুস্থ রয়েছেন।

উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন মাস্টার শহিদুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় জনসাধারণ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।

এদিকে তাৎক্ষণিক ঘটনারস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহছেন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হয়ে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করছি। সঠিক তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।