ঢাকা ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ তহবিল চালু ঝিনাইগাতীতে পানিতে নিখোঁজ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার অধিকার রক্ষায় শেরপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত জামালপুরে বিদ্যুৎ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নতুন কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামে ওয়ারেছ আলী মামুন সংবর্ধিত নদী ভাঙনের কবল থেকে মসজিদ ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে বকশীগঞ্জে মানববন্ধন দুর্গাপূজার প্রস্তুতি সভা করেছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন জামাল পাশা, শাহেদ আলী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ব্যস্ততা চলছে মাদারগঞ্জের প্রতিমাশিল্পীদের, ২৭ মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি দেওয়ানগঞ্জে উপহারের বেশির ভাগ ঘরের দরজায় ঝুলছে তালা

দেওয়ানগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ঘরবাড়ি ফসলের ক্ষতি, ১৪টি বাড়ি বিলীন, হুমকিতে সানন্দবাড়ী সেতু

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডাংধরা ইউনিয়নের জিঞ্জিরাম নদী ও মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা নকাই ঝর্ণার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডাংধরা ইউনিয়নের পাথরেরচর গ্রামে তীব্র নদী ভাঙনে ইতিমধ্যে আশরাফুল, দুলাল, নশু, রবিউল, ইদ্রিস, শাহজাহান, হাসান, আলী, জরিনা, রশিদেরসহ ১৪টি পরিবারের বাড়িঘর নকাই ঝর্ণার ও জিঞ্জিরাম নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উঠতি ফসল রোপা আমন ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার মানুষ।

ভুক্তভোগী আম্বিয়া খাতুন বলেন, পাহাড়ি ঢলে বাড়ি ভেঙে গেছে। তিন সন্তান নিয়ে রাস্তায় কষ্টে দিন যাপন করছি।

সানন্দবাড়ীতে নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

শুক্কুর আলী জানান, পাহাড়ি ঢলে ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। কোথাও মাথা গুঁজার ঠাঁই নেই। রাস্তায় সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। প্রশাসনের নিকট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের আবেদন, ত্রাণ নয় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক।

সাবেক চেয়ারম্যান শাহ মো. মাসুদ জানান, প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলে ঝর্ণার পানিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সীমান্ত অঞ্চলের জনগণকে বাঁচাতে হলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

কাউনিয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তারুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর পাহাড়ি ঢলে নকাই ঝর্ণার ভাঙনে পাড়ের মানুষগুলোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এর দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না হলে, পাথরের চর গ্রামের শত শত মানুষের বাড়িঘরের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।

সানন্দবাড়ীতে নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

দীপশিখা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর কবির জানান, জিঞ্জিরাম নদী ও নকাই ঝর্ণার পাহাড়ি ঢলে নদীভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে পাথরের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দীপশিখা উচ্চ বিদ্যালয়, বিজিবি ক্যাম্প, মসজিদসহ অন্যান্য স্থাপনা। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

ডাংধরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহযোগিতার জন্য দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে জানিয়েছি।

অপর দিকে চর আমখাওয়া ইউনিয়নের সানন্দবাড়ী লম্বাপাড়ায় জিঞ্জিরাম নদীর ভাঙনে সানন্দবাড়ী সেতু হুমকির মধ্যে রয়েছে। জিঞ্জিরাম নদীর ভাঙনে আবাদি জমি, বসতবাড়ি এবং সানন্দবাড়ী সেতুর ১০০ মিটার পূর্ব দিকে বাঁধ ভেঙে গেছে। পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে ভাঙন অব্যাহত আছে।

দেওয়ানগঞ্জ, রাজিবপুর, রৌমারী উপজেলার যোগাযোগ মাধ্যম এই সানন্দবাড়ী সেতু। এ সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। সেতুর দক্ষিণ পাশে মাটি ধ্বসে গেলে সেতু ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

সানন্দবাড়ীতে নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

চর আমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জানান, সেতু রক্ষায় ইতিপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।

লম্বাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সৈয়জ্জামান ও মো. বাহাদুর জানান, গত সরকারের আমলে অনেক নেতাকর্মী কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ কাজ করে নাই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এসে জরিপ করে গেছে। কোন কাজ হয়নি।

সেতুর পূর্বদিকে ভাঙন রোধে বালির বস্তা ফেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকার জনগণ জোর দাবি জানান।

এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, পাথরেরচরে পাহাড়ি ঢলে বাড়িঘর বিলীন হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। সানন্দবাড়ী সেতুসহ এসব বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ তহবিল চালু

দেওয়ানগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ঘরবাড়ি ফসলের ক্ষতি, ১৪টি বাড়ি বিলীন, হুমকিতে সানন্দবাড়ী সেতু

আপডেট সময় ০৩:০৯:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডাংধরা ইউনিয়নের জিঞ্জিরাম নদী ও মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা নকাই ঝর্ণার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডাংধরা ইউনিয়নের পাথরেরচর গ্রামে তীব্র নদী ভাঙনে ইতিমধ্যে আশরাফুল, দুলাল, নশু, রবিউল, ইদ্রিস, শাহজাহান, হাসান, আলী, জরিনা, রশিদেরসহ ১৪টি পরিবারের বাড়িঘর নকাই ঝর্ণার ও জিঞ্জিরাম নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উঠতি ফসল রোপা আমন ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার মানুষ।

ভুক্তভোগী আম্বিয়া খাতুন বলেন, পাহাড়ি ঢলে বাড়ি ভেঙে গেছে। তিন সন্তান নিয়ে রাস্তায় কষ্টে দিন যাপন করছি।

সানন্দবাড়ীতে নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

শুক্কুর আলী জানান, পাহাড়ি ঢলে ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। কোথাও মাথা গুঁজার ঠাঁই নেই। রাস্তায় সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। প্রশাসনের নিকট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের আবেদন, ত্রাণ নয় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক।

সাবেক চেয়ারম্যান শাহ মো. মাসুদ জানান, প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলে ঝর্ণার পানিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সীমান্ত অঞ্চলের জনগণকে বাঁচাতে হলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

কাউনিয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তারুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর পাহাড়ি ঢলে নকাই ঝর্ণার ভাঙনে পাড়ের মানুষগুলোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এর দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না হলে, পাথরের চর গ্রামের শত শত মানুষের বাড়িঘরের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।

সানন্দবাড়ীতে নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

দীপশিখা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর কবির জানান, জিঞ্জিরাম নদী ও নকাই ঝর্ণার পাহাড়ি ঢলে নদীভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে পাথরের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দীপশিখা উচ্চ বিদ্যালয়, বিজিবি ক্যাম্প, মসজিদসহ অন্যান্য স্থাপনা। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

ডাংধরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহযোগিতার জন্য দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে জানিয়েছি।

অপর দিকে চর আমখাওয়া ইউনিয়নের সানন্দবাড়ী লম্বাপাড়ায় জিঞ্জিরাম নদীর ভাঙনে সানন্দবাড়ী সেতু হুমকির মধ্যে রয়েছে। জিঞ্জিরাম নদীর ভাঙনে আবাদি জমি, বসতবাড়ি এবং সানন্দবাড়ী সেতুর ১০০ মিটার পূর্ব দিকে বাঁধ ভেঙে গেছে। পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে ভাঙন অব্যাহত আছে।

দেওয়ানগঞ্জ, রাজিবপুর, রৌমারী উপজেলার যোগাযোগ মাধ্যম এই সানন্দবাড়ী সেতু। এ সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। সেতুর দক্ষিণ পাশে মাটি ধ্বসে গেলে সেতু ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

সানন্দবাড়ীতে নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

চর আমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জানান, সেতু রক্ষায় ইতিপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।

লম্বাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সৈয়জ্জামান ও মো. বাহাদুর জানান, গত সরকারের আমলে অনেক নেতাকর্মী কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ কাজ করে নাই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এসে জরিপ করে গেছে। কোন কাজ হয়নি।

সেতুর পূর্বদিকে ভাঙন রোধে বালির বস্তা ফেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকার জনগণ জোর দাবি জানান।

এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, পাথরেরচরে পাহাড়ি ঢলে বাড়িঘর বিলীন হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। সানন্দবাড়ী সেতুসহ এসব বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।