চাকরি বাঁচাতে ঢাকায় ফেরার পথে পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু: পাশে দাঁড়ালো শেরপুর জেলা প্রশাসন

সোহাগের বাবা-মায়ের হাতে জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদের পক্ষে ইউএনও জাহিদুর রহমান আর্থিক সহায়তা দেন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের নকলা উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পোশাক শ্রমিক সোহাগের পরিবারের পাশে দঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। ১ আগস্ট সকালে নকলার ইউএনও জাহিদুর রহমান উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের মোজারকান্দা গ্রামের ওই পোশাক শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে শোক প্রকাশ করেন।

এ দিন সোহাগের বাবা-মায়ের হাতে জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদের পক্ষে ইউএনও নগদ ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেন। এসময় নিহত সোহাগের মা-বাবা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

৩১ জুলাই সোহাগ (৩০) পোশাক কারখানায় চাকরি বাঁচাতে ট্রাকে ঢাকা যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় আহত হয় তার স্ত্রী ও শিশু সন্তান।

সোহাগের বাবা আতশ আলী বলেন, ছেলে মারা যাওয়ায় আমরা অসহায় হয়ে গেছি। ওই ছেলেই ছিল পরিবারের ভরণ পোষণের একমাত্র অবলম্বন। আজ ডিসি স্যার, ইউএনও স্যার, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। এবং আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। এ জন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

বানেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত বলেন, এই পরিবারটির উপার্জনক্ষম একমাত্র লোক ছিল পোশাক শ্রমিক সোহাগ মিয়া। সে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ায় পরিবারটি অসহায় হয়ে গেল। এই পরিবারটির প্রতি আমার সব সময় সুনজর থাকবে। এছাড়া সোহাগের আহত স্ত্রী-সন্তানের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও জাহিদুর রহমান বলেন, ওই সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সোহাগের স্ত্রী ও তার এক শিশু সন্তান। শিশু সন্তানটি হাতে ও গলায় এবং স্ত্রী কোমরে ও বুকে আঘাত পেয়ে আহত হয়েছে। তারা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে এসেছেন। পূর্ণাঙ্গ সুস্থ হতে তাদেরকে শেরপুর জেলা সদর বা নকলা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সোহাগ ৩১ জুলাই সকালে ট্রাকে করে ঢাকায় নিজ কর্মস্থলে যাওয়ার সময় ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলার মধ্যবর্তী এক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি ট্রাক তাদের ধাক্কা দেয়। এ সময় সোহাগ তার স্ত্রী-সন্তান ও মিন্টু মিয়াসহ বেশ কয়েকজন ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায়। একই সময় পিছন দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাক সোহাগ মিয়াকে পিষে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।