জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার এক তরুণীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ, ধর্ষণ-পরবর্তী গর্ভবতী ও গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী জাহিদুল ইসলামের (২৫) বিরুদ্ধে। ওই তরুণী সরিষাবাড়ী উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত জাহিদুল ইসলামের বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের স্বজনেরা। ১১ এপ্রিল শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে জাহিদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই তরুণী সপ্তম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি জাহিদুল ইসলাম উপজেলার আওনা ইউনিয়নের নাথেরপাড়া গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে। জাহিদুল ইসলামদের প্রতিবেশী হওয়ায় তাদের বাড়িতে যাওয়া আসা করত ওই তরুণী। জাহিদুল ইসলাম এ সুযোগে ওই তরুণীকে কুপ্রস্তাব দেন। কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে বিভিন্ন সময় প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলাতে থাকেন জাহিদুল ইসলাম। একপর্যায়ে গত বছরের ১২ আগস্ট জাহিদুল ইসলামের নির্মাণাধীন পাকাভবনে ওই তরুণীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে বললে খুন করারও হুমকি দেন তিনি।
একপর্যায়ে ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। অন্তঃসত্ত্বার বিষয় কাউকে বললে খুন করার হুমকি দেন জাহিদুল ইসলাম। ভয়ে ওই তরুণীর পরিবার বিষয়টি গোপন রাখে। এরপরও গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন জাহিদুল ইসলাম।
১১ এপ্রিল জাহিদুল ইসলামের বোন সুবর্নার মাধ্যমে সুকৌশলে ওই তরুণীকে ওষুধ খাওয়ায়ে ওই তরুণীর গর্ভপাত করে সন্তান নষ্ট করায়। এরপর ওই তরুণী অসুস্থ হলে পরিবারের লোকজন সরিষাবাড়ী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় তাকে। এ ঘটনায় ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে জাহিদুল ইসলাম ও তার বোন সুবর্নাকে আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী অভিযোগ করে বলেন, আট মাস আগে জাহিদুল ইসলাম আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এরপর গর্ভবতী হয়ে যাই। বিষয়টি জাহিদুলকে বললে বাচ্চা নষ্ট করার ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করায়। আমি এর বিচার চাই।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, জাহিদুল ইসলাম মেয়েটির জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। এখন তিনি পালিয়ে বিদেশে যাওয়ার পায়তারা করছেন। মেয়েটির পরিবার গরিব। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন তারা।
সরিষাবাড়ী উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) চিকিৎসক রবিউল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, গর্ভপাত হওয়ার পর এক তরুণী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, ১১ এপ্রিল রাতে ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে জাহিদুল ইসলাম ও তার বোন সুবর্নার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।