জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় চিকিৎসকের অবহেলায় রজব আলী (৪৫) নামে এক রিকশাচালকের মৃত্যুর অভিযোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমওকে মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. মোহাম্মদ আজিজুল হক হক বাদী হয়ে বকশীগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
এ মামলায় বকশীগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল ইসলামসহ আটজনকে নামীয় ও অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের পর চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় পৌর শহরের সীমার এলাকার আব্দুল আলীমের ছেলে খোকন মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জানা যায়, ২৮ অক্টোবর সোমবার বিকাল ৫টার দিকে বুকে ব্যাথা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন রিকশাচালক পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাউরিয়া সীমারপাড় গ্রামের বাসু মিয়ার ছেলে রজব আলী।
এর কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হলে রজব আলীর স্বজন ও স্থানীয় এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আসমা লাবনীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং তাকে মারধর করেন।
একজন নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় হাসপাতালের সকল চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠে। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সকাল থেকে অর্নিদিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেন। কর্মবিরতির ফলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। এতে করে হাসপাতালে ভর্তিরত রোগীসহ সেবা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় রোগীর স্বজনদের।
এক পর্যায়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সেবাদান কার্যক্রম চালু করেন হাসপাতালের সকল স্টাফ।
কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেও আইনগত প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
পরে ২৯ অক্টোবর রাতেই চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় আটজনকে নামীয় ও অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বাদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, কর্মস্থলে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করাসহ জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ এ প্রতিবেদককে বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।