জামালপুরের বামুনপাড়ায় শব্দদূষণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

এলাকাবাসীর মানববন্ধন। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

পরিবেশ অধিদপ্তরের বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও জামালপুর পৌরসভার পূর্ব বামুনপাড়ায় ব্যক্তি মালিকানকায় গড়ে তোলা হয়েছে সিন ওয়ান ব্লক এন্ড টাইলস ফ্যাক্টরি নামে একটি কারখানা। এ কারখানা চালু করার সময় বিকট শব্দে মাটি, ঘর, বাড়ি কেঁপে উঠে। যতক্ষণ কারখানা চালু থাকে ততক্ষণ এলাকাবাসী শব্দদূষণের শিকার হয়ে থাকে। শব্দদূষণ বন্ধের দাবিতে ভুক্তভোগী জনগণ ওই কারখানার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ৯ মার্চ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুর পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম। শতাধিক নারী, পুরুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বিকট শব্দ বন্ধ বা শব্দ নিয়ন্ত্রণ করার দাবিতে শ্লোগান দেন।

এলাকার ভুক্তভোগী অমর মিয়া জানান, যখন কারখানা চালু করে তখন কান বন্ধ করে রাখতে হয়। যতক্ষণ কারখানা চালু থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত মাথা ঝিম ঝিম করতে থাকে। মাটি কাপে, ঘর কাপে। বুক ধড়ফড় করতে থাকে। আমরা কারখানা বন্ধ হোক চাই না। তবে শব্দ বন্ধ করা হোক। যদি শব্দ নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তাহলে আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো।

শব্দ দূষণ বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

রফিক মিয়া বলেন, এ কারখানা চালু করার পর থেকে এলাকার টিভি, ফ্রিজ নষ্ট হয়ে গেছে। কারখানা চালু করার সময় বিকট আওয়াজে টিভি, ফ্রিজ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ অফ হয়ে যায়। এলাকায় হার্টের, মাথার ও কানের রোগের সংখ্যা বেড়ে গেছে। শিশুদের কানে শোনতে সমস্যা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এলাকাবাসীর মাঝে স্বাস্থ্যগত বিপর্যয় নেম আসবে।

জামালপুর পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকার জনস্বার্থে আবাসিক এলাকায় এসব দূষণ সৃষ্টিকারী কারখানা স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও প্রভাশালীরা এসব নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে। বামুনপাড়া এলাকায় এ ধরনের কারখানা না রাখার দাবি জানান। এ কারখানাটি স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টির পাশাপাশি পরিবেশের চরম বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করেছে। তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় এলাকাবাসীকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

জামালপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উত্তম কুমার সরকার বলেন, এধরনের শব্দে হৃদরোগ, কানের সমস্যা হবে এটাই স্বাভাবিক। শব্দ দূষণ মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।

এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়রের কাছে আবেদন করা হলে তিনি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।