খান বাহাদুর আহছানউল্লা স্বর্ণপদক পাচ্ছেন জামালপুরের স্বর্ণ সন্তান ড. আতিউর রহমান

ড. আতিউর রহমান

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক :

আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও দেশের অর্থনীতিতে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমানকে ২০২১ সালের খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা স্বর্ণপদক প্রদানের জন্য নির্বাচিত করেছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন।

ড. আতিউর রহমান ১৯৫১ সালের ৩ আগস্ট জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সেন্টার ফর অ্যাডভান্স রিসার্চ অন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যালের নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও উন্নয়ন সমন্বয়েরও সভাপতি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক।

তিনি দীর্ঘকাল বিআইডিএস-যুক্ত থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন ২০০৬ সালে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে ২০০৯ সাল থেকে প্রায় সাতবছর আর্থিক সেবাখাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ডিজটাল বাংলাদেশ নির্মাণে প্রযুক্তিনির্ভর সেবাসহ অন্যান্য উদ্ভাবনী কর্মসূচির মাধ্যমে দেশে ‘আর্থিক অন্তর্ভুক্তির নীরব বিপ্লব’-এ অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। ওই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে উন্নয়নমুখী কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে রূপান্তরিত করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কল্যাণমুখী অনেক গবেষণারও গোড়াপত্তন করেন তিনি। তাছাড়া, সবুজ অর্থায়নের নীতি কৌশলেরও তিনি প্রবক্তা ছিলেন।

জনবান্ধব গবেষণার জন ‘গরীবের অর্থনীতিবিদ’ এবং পরিবেশবান্ধব অর্থায়নে নেতৃত্বের কারণে ‘সবুজ গভর্নর’ হিসেবে পরিচিত। রবীন্দ্রনাথের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ভাবনাও তার গবেষণায় সবসময় গুরুত্বের সাথে বিবেচিত। মোট ৮০টিরও বেশি গ্রন্থ রচনার পাশাপাশি দেশে ও বিদেশে তিনি অসংখ্য গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। তার লেখা/সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে পিজ্যান্সট অ্যান্ড ক্লাসেস, ভাষা-আন্দোলনের আর্থসামাজিক পটভূমি, জনমানুষের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু সহজপাঠ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি এবং শেখ মুজিব বাংলাদেশের আরেক নাম।

বেস্ট সেন্ট্রাল ব্যাংক গভর্নর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক ২০১৫ (ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস), গুসি শান্তি পুরস্কার, ইন্দিরা গান্ধী স্বর্ণ স্মারক, শেলটেক পুরস্কার এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৫, বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কার ২০২১, রবীন্দ্র একাডেমির সম্মাননা ২০২২ সহ অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন।

উল্লেখ্য, সমাজের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত ১১ সদস্যের একটি জুরি বোর্ড সর্বসম্মতিক্রমে ড. আতিউর রহমানকে এই পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। শ্রীঘ্রই এই পুরস্কার আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর হাতে তুলে দেয়া হবে। এই পদকের মূল্যমান ২ ভরি পরিমাণ একটি স্বর্ণপদক, নগদ দুই লক্ষ টাকা, মনোগ্রাম সম্বলিত একটি ক্রেস্ট এবং একটি সনদপত্র।

উপমহাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক, সুফি সাধক, তৎকালীন জনশিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রতিষ্ঠাতা হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার নামে ১৯৮৬ সাল থেকে এ পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে।