হিজড়া সদস্যরা পেল জামালপুর সমিতির কম্বল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

চলমান শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগের শিকার সমাজের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী হিজড়া সদস্যদের মাঝে একটি করে কম্বল বিতরণ করেছে ঢাকাস্থ জামালপুর সমিতি। ২৩ জানুয়ারি জামালপুর পৌরসভার বেলটিয়া শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে জামালপুর সদর, মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার ২৪০ জন হিজড়া সদস্যের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।

কম্বল বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জামালপুর সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান ও শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির আহ্বায়ক ডা. শাহীনা সোবহান মিতু। এতে সভাপতিত্ব করেন জামালপুর সমিতির মহাসচিব গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) শেখ শফিকুল ইসলাম।

হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবন বৈচিত্র এবং নানা বঞ্চনা, নির্যাতন ও বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জামালপুর পৌরসভার সাবেক কমিশনার শেখ জোলফোক্কার রহমান শাহীন, শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রেজাউল ইসলাম, উন্নয়ন সংঘের হিজড়া প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা আরজু মিয়া প্রমুখ।

পরে জামালপুর সদর উপজেলার ১৫০ জন, মাদারগঞ্জ উপজেলার ৪০ জন এবং মেলান্দহ উপজেলার ৫০ জন হিজড়া সদস্যদের মাঝে উন্নত মানের কম্বল বিতরণ করা হয়।

হিজড়া সদস্য আনজু কম্বল পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সমাজের মানুষ আমাগোরেত মানুষই মুনে করে না। আমগোরে কষ্টের কথা বুঝবার পাইয়ে জামালপুর সমিতি কম্বল দেওয়ায় ধন্যবাদ জানাই। স্নাতকোত্তর হিজড়া সদস্য রাসেল বলেন, কম্বল দেওয়ার জন্য জামালপুর সমিতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। জামালপুর সমিতি যদি আমরা যারা শিক্ষিত তাদের চাকরির ব্যবস্থা করতো তাহলে আমাদের জীবনমানের উন্নতি আসতো।

জামালপুর সমিতির মহাসচিব শেখ শফিকুল ইসলাম বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা যে সুশৃঙ্খল এবং মানুষের প্রতি সম্মানবোধ প্রকাশ করতে পারে আজকের এ অনুষ্ঠানে তাদের অংশগ্রহণ না দেখলে বুঝতে পারতাম না। আমাদের মাঝে তাদেরকে নিয়ে ভুল ধারণাটা ভাঙতে হবে। আমরা যোগ্যতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা বিবেচনা করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো।

জামালপুর সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. শাহীনা সোবহান মিতু বলেন, এখন থেকে হিজড়া জনগোষ্ঠীর কল্যাণে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করবো।

উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, জামালপুরে হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আমরা নানামুখী পরিকল্পনা ও বিএসআরএম এর সহযোগিতায় কিছু কিছু কাজ করছি। জামালপুর সমিতি এই সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর দিকে নজর দিলে তাদেরকে উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় নিয়ে আসা সহজ হতো।