রেল লাইন ও ট্রেনে নাশকতার অভিযোগে আটক ৯

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক :

রেললাইন ও ট্রেনে নাশকতার অভিযোগে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে।

রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও র‌্যাব-১ যৌথ অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাদের আটক করে।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১) এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ সাংবাদিকেদের বলেন, বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকায় ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। তারা সন্দেহভাজন নাশকতাকারী। তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

মোসতাক আহমদ বলেন, ‘আটককৃতরা সামান্য কিছু উৎকোচের বিনিময়ে চলমান হরতাল অবরোধকে কেন্দ্র করে রেললাইন ও ট্রেনে নাশকতা করতো। সম্প্রতি নেত্রকোনা থেকে তেজগাঁও রেলস্টেশনে আগত একটি ট্রেনের বগিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় এক শিশু ও নারীসহ ৪ জন নিহত হন।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, এরা কোন কুচক্রী মহলের হয়ে স্বল্প টাকার বিনিময়ে এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে থাকে। তারা বিভিন্ন জায়গাতে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও বিভিন্ন ধরনের মামলা রয়েছে। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

র‌্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার বলেন, ‘রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে আমরা রেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাবো। যতক্ষণ পর্যন্ত ট্রেনের যাত্রীরা নিরাপত্তা নিশ্চিত অনুভব না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

ভবিষ্যতে ট্রেনে অগ্নিকান্ডের আশঙ্কা আছে কি না এবং বাড়তি কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে ? এমন প্রশ্নের জবাবে মোসতাক আহমদ বলেন, ‘প্রথমে বাস-ট্রাকে অগ্নি-সন্ত্রাস ছিল। কিন্তু অতি সম্প্রতি সময়ে তা রেলের ওপরেও এসেছে। যার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।’

নাশকতাকারীরা এ ধরনের কাজ করে কখনো রেহাই পাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রেলস্টেশনে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন রয়েছে। ট্রেন আসা ও যাওয়ার সময় নজরদারি করা হচ্ছে। আশা করি, নাশকতাকারীরা আর এ ধরনের কাজের সাহস পাবে না।’

নাশকতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আটক করেছি। তারা সন্দেহভাজন নাশকতাকারী। এরা বিভিন্ন নাশকতার সঙ্গে জড়িত ছিল। এদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে মামলা রয়েছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোসতাক আহমদ বলেন, ‘টঙ্গী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যে সব অপরাধী রয়েছে, তাদের ডাটাবেস সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব আসামিদের আমরা প্রতিনিয়ত নজরদারি করছি।’

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে এক নারীসহ ৪জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে নাদিয়া আক্তার পপি (৩৫) ও তার ৩ বছরের শিশুসন্তান ইয়াসিন রয়েছে। নিহতরা সবাই রেলের যাত্রী ছিলেন। বাকী ২ জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি নেত্রকোনা থেকে ঢাকায় আসছিল।