নয়াদিল্লি’র জি২০ শীর্ষ সম্মেলন এড়িয়ে যেতে পারেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্ভবত আগামী সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি ২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন এড়িয়ে যাবেন। সম্মেলনের সাথে সম্পর্কিত ভারত ও চীনের পরিচিত সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে অবশ্য বলা হয় যে, নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে নবনির্মিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্র ‘ভারত মন্ডপম’-এ ৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বেইজিংয়ের প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দুই ভারতীয় কর্মকর্তা, চীন ভিত্তিক এক কূটনীতিক এবং অন্য একটি জি-২০ দেশের সরকারের পক্ষে কর্মরত এক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং নয়াদিল্লিতে ৯-১০ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে বেইজিংয়ের প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ভারত ও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রদের এ ব্যাপারে মন্তব্যের অনুরোধ জানালে, তারা কোন জবাব দেননি।’ এদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও ভারতে ৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে অপারগতার কথা জানিয়েছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এই অনুষ্ঠানে তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

শীর্ষ সম্মেলনটি ভারতে বিশ্ব নেতাদের অন্যতম বৃহত্তম সমাবেশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ ২৫ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা এই মেগা সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের আউটরিচ বর্ধিতকরণের অধীনে আমন্ত্রিত আসন্ন জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সূত্রের মতে, জি-২০ ইভেন্টে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী ৮ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে পৌঁছবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এবারের জি২০-এর থিম হল- ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ বা ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’।

রাজধানীতে আসন্ন জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। এই আয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীতে সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারী অফিস, ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৮ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। দিল্লি সরকারের সাধারণ প্রশাসন বিভাগের (জিএডি) জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শহর জুড়ে সরকারী ও বেসরকারী অফিসগুলো এই তিন দিনের জন্য বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে, দিল্লি স্বাস্থ্য বিভাগ চিকিৎসক এবং নার্সিং কর্মীদের ৮০ টি দল গঠন করেছে, যারা হোটেলে থাকা অতিথিদের সেবা প্রদান করবে। এই টিমের বাইরে ৭৫ টি দল শিফটে কাজ করবে। কর্মকর্তারা বুধবার এ কথা জানিয়েছেন।

যাইহোক, শীর্ষ সম্মেলনের দৌড়ে দিল্লি একটি চিত্তাকর্ষক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই সম্মেলনের আগে রাজধানী এবং শীর্ষ সম্মেলনস্থলের আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশ্বনেতাদের অভ্যর্থনা জানাতে ইন্দিরা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে মূল রাস্তাগুলো বিশাল থিম্যাটিক জি ২০ লোগো দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে, আধুনিকতার সাথে ভারতীয় সংস্কৃতির সংমিশ্রণে বিলবোর্ড এবং শিল্পকর্মগুলো প্রদর্শন করে তাদের স্বাগত জানানো হচ্ছে।

শহরের প্রধান সড়ক ও রাস্তাগুলোকে গাছপালা, ফোয়ারা, ভাস্কর্য দিয়ে সুশোভিত ও বর্ণিল আলোয় আলোকিত করা হয়েছে এবং পার্ক ও খোলা জায়গাগুলো নতুন রূপ পেয়েছে। কর্তৃপক্ষ ৮ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিমানবন্দর হতে শহরের আইকনিক প্রগতি ময়দানের শীর্ষ সম্মেলনস্থল পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য সর ধরণের পরিবহনের চলাচল সীমাবদ্ধ করে ট্রাফিক নির্দেশনা জারি করেছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী পর্যায়ের এবং ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে আলোচিত এবং সম্মত অগ্রাধিকারগুলোর প্রতি নেতাদের প্রতিশ্রুতি উল্লেখ করে শীর্ষ সম্মেলন শেষে জি ২০ নেতাদের ঘোষণা গৃহীত হবে।