শেরপুরে গাছে বেঁধে যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় দুই আসামি গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার দুই আসামি। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুরে সুদের টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগ তুলে সাইফুল ইসলাম (২৪) নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাতভর নির্যাতন এবং হত্যা চেষ্টায় অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪। গ্রেপ্তাররা হলেন আব্দুল মালেক এবং জুয়েল। ১১ জুন রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংস্থাটি।

সদর থানার ওসি বছির আহমেদ বাদল জানান, গ্রেপ্তার আসামিদের ১২ জুন আদালতে পাঠানো হবে।

র‌্যাবের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান জানান, প্রায় চার মাস আগে আর্থিক সঙ্কটের কারণে জেলার সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের চকআন্ধারিয়া গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী আব্দুল মালেকের কাছ থেকে সুদে ছয় হাজার টাকা ধার নেন সাইফুল ইসলাম। গত ৪ জুন সন্ধ্যায় আব্দুল মালেকের কাছ থেকে নেয়া আসল ছয় হাজার টাকা ফেরত দেন সাইফুল। কিন্তু দাদন ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক তার কাছে লাভের অতিরিক্ত টাকা দাবি করে। ওই টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে স্থানীয় জুয়েলের সহায়তায় দেশীয় অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ওই রাতে সাইফুলের বাড়িতে হানা দেয় মালেক। পরে সাইফুলকে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত জখম করে। মারামারির একপর্যায়ে সাইফুলকে জোরপূর্বক টেনে হেছড়ে মালেক তার বাড়িতে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে ধারালো দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করে স্বজোরে কোপ মারে। এ সময় সাইফুল মাথা সরিয়ে নিলে কোপ তার মাথায় না লেগে পিঠের ডান পাশে লেগে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়।

পরে সাইফুলের ভগ্নীপতি আনোয়ার হোসেন (৪৫) বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় অভিযোগ দাখিল করে।

স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান বলেন, ওই ঘটনাটি বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট এবং অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হওয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে আসামিরা গ্রেপ্তার এড়ানোর লক্ষ্যে শেরপুর ও জামালপুরের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিল। পরে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম এম সবুজ রানার নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল ১১ জুন শেরপুর সদর উপজেলার বেলতলী বাজার থেকে প্রধান আসামি আব্দুল মালেককে এবং জামালপুর সদরের বড় ডোয়াতলা এলাকা থেকে অন্যতম আসামি জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে। পরে আসামিদের শেরপুর সদর থানায় হস্থান্তর করা হয়।

প্রসঙ্গত, নির্যাতনের ঘটনার পর দিন ৫ জুন সাইফুলকে গাছে বেঁধে রাখার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাইফুলকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।