মডেল মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকদের মারধর, আহত ৪

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত চারজন। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় মডেল মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিত্তিপ্রস্তর না থাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য মুরাদ হাসান এমপির সমর্থক ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীসহ চারজন আহত হয়েছে।

১৬ জানুয়ারি সকালে উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত প্রকৌশলী জনিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশ ইসলামি ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ৫৬০টি জেলা ও উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেয় গণপূর্ত অধিদপ্তর। এ প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে সরিষাবাড়ীতে উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মুরাদ হাসান এমপি।

সরিষাবাড়ী উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইসলাম ব্রাদার্স ও তরফদার ট্রেড কর্পোরেশন। যথা সময়ে এ মডেল মসজিদ ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়। পরে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তরফদার ট্রেড কর্পোরেশন ওই ভিত্তি প্রস্তরের নাম ফলক সরিয়ে ফেলে।

১৬ জানুয়ারি সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে ভার্চুয়ালী ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসার পথে নাম ফলক দেখতে না পেয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী জনি মিয়া মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে চেষ্টা করেন। পরে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর কর্মীসমর্থকরা তাকে মারধর শুরু করেন। এ সময় মারামারি থামাতে গিয়ে বিপুল মিয়া (২৮), রকিব (৩০) ও সৌরভ (২১) নামে আরো তিন শ্রমিক আহত হন।

তরফদার ট্রেড কর্পোরেশনের প্রকৌশলী জনি মিয়া বলেন, তিনি কোন ছবি কিংবা ভিডিও ধারন করেননি। তবুও তারা তাকে মারধর করতে থাকলে এমপির প্রতিনিধি মুকুল তাকে মারধরের হাত থেকে রক্ষা করেন বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তরফদার ট্রেড কর্পোরেশনের প্রতিনিধি সোহেল তরফদার এ প্রতিবেদককে বলেন, ভিত্তিপ্রস্তরটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে স্থাপন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অনাকাঙ্খিত। বিচার দাবি করেন তিনি।

সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী সংসদ সদস্য চিকিৎসক মুরাদ হাসানের প্রতিনিধি সাখাওয়াত আলম মুকুল বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মডেল মসজিদ এর ভিত্তিপ্রস্তরের নাম ফলক ভেঙ্গে সরিয়ে ফেলেছে। এ কারণে কর্মীদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ উত্তেজনার ছবি তুলতে গিয়ে কর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী জনি মিয়া। বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, মডেল মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিত্তিপ্রস্তর না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মী-সমর্থকদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ কঠোর হাতে তা নিয়ন্ত্রণ করে। মারধরের কোন অভিযোগ কেউ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।