খোলাবাড়ী-দেওয়ানগঞ্জ সড়ক ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

নদে বিলিন হওয়া সড়ক।একমাত্র সড়কটি বিচ্ছিন্ন থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

বিল্লাল হোসেন মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, দশানী, জিঞ্জিরাম নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি থাকায় উপজেলার নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কয়েকদিনে টানা ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়ে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়েছে খোলাবাড়ী ও দেওয়ানগঞ্জ প্রধান সড়ক। এতে চরম বিপাকে পড়েছে বাহাদুরাবাদ নৌ-থানাসহ ১০ হাজার মানুষ। নদী ভাঙনের হুমকির মধ্যে রয়েছে প্রায় ৬টি গ্রাম।

জানা গেছে, সড়কটি গত বছর ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হয়েছিল। স্থানীয় আসনের এমপি আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোলায়মান হোসেন ব্যক্তিগত তহবিল ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ক্ষতিগ্রস্ত ভাঙ্গনে বালি ও বস্তা ফেলে সড়কটি মেরামত করা হয়। চলতি বছর নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী ৫ মিটার সংস্কারকৃত সড়ক নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সড়ক দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়েছে বাহাদুরাবাদ নৌ-থানা পুলিশসহ হাজার হাজার পথচারী মানুষ। চিকাজানি ইউনিয়নে দীর্ঘ দিন থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর নদী ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে চিকাজানি খোলাবাড়ীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসা, বাজারসহ ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ডের পরিবার।

চলতি বছর বর্ষার শুরুতেই ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, দশানি, জিঞ্জিরাম নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার চিকাজানি, ইউনিয়নে বিভিন্ন এলাকা ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, বাহাদুরাবাদ নৌ-থানা, খোলাবাড়ী, মোন্নে বাজার, ফারাজি পাড়া, কাজলা পাড়া, মন্ডল বাজার, গুচ্ছ গ্রাম ও ৬টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি গত ৩ বছর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙনের পথে থাকলেও নদী ভাঙন রোধে তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এলাকাবাসী জানান, ২০২০ সালে সড়কটি প্রথম ভাঙন শুরু হয়, চলতি বছর বর্ষা মৌসুমের প্রথমে নদী ভাঙন শুরু হলে স্থানীয়ভাবে কিছু বালির বস্তা এবং বাঁশ দিয়ে নদী ভাঙন প্রতিরোধের কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও, তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে এই অঞ্চলের মানুষ।

বাহাদুরাবাদ নৌ-থানা অফিসার ইনর্চাজ মিজানুর রহমান জানান, গত বছর এ সড়ক নদী গর্ভে বিলীন হলে কিছু বালু ও বস্তা, ডাম্পিং করা হয়। উচুকরণ না হওয়ায় ১৬ জুন রাতে অবিরাম বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এই সড়কটি ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে চরম অবহেলার কারণে সড়কটি রক্ষার কোন ব্যবস্থা কেউ গ্রহণ করেনি। সেজন্য এই জনপদের মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কটি এখন বিচ্ছিন্ন থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী।