ঘুষখোর দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে : মির্জা আজম
মাহমুদুল হাসান মুক্তা, নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেছেন দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে, নাহলে চাকরি ছেড়ে দিতে হবে। বেতনের টাকায় না পুষালে চাকরি ছেড়ে ভিক্ষা করে ক্ষেতে হবে। দুর্নীতি করে খাওয়ার চেয়ে ভিক্ষা করে খাওয়ার মর্যাদা অনেক বেশি।
৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উম্মোচন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আজম এমপি এসব কথা বলেন।
মির্জা আজম বলেন, আজকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষায় কথা বলেন আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে একই ভাষায় কথা বলেন। তার এই বক্তৃতার মাধ্যমেই আপনারা সবাই অনুভব করতে পেরেছেন যে ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের তিনি পছন্দ করেননা। আমরা যারা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সৈনিক বলে দাবি করি আমরা কি এটা বুকে ধারণ করি বঙ্গবন্ধু যেভাবে দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করতো, বঙ্গবন্ধুর কন্যা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যেভাবে কথা বলে এই কথাগুলো কি আমরা প্রচার করি? করিনা। আমাদের দায়িত্ব তার এই কথাগুলো সবার প্রচার করা। তার সকল উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের সবার।
এমপি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন জীবিত ছিলেন তিনি ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিলে তখন কিন্তু ঘুষখোররা কোন কথা বলার সাহস পেতো না। আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ঘুষখোরদের নিয়ে কথা বলে তখন কিন্তু কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। কিন্তু আমরা যখন ঘুষখোরদের নিয়ে কথা বলি, যখন দুর্নীতিবাজদের নিয়ে কথা বলি তখন চুরের দল এখন কিন্তু সমিতি বানিয়ে ফেলেছে। ওই সমিতি থেকে আমাদের বেসকি মারে, হুমকি দেয়। আজকে চুরদের চুর বললে বান্দরের মত বেসকি মারে আমাদের। আজকে যখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতা যদি আমরা মনে ধারণ করি ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ভিক্ষা করে খেতে বলছে আমরা যদি এ বিষয়ে কর্মসূচি নেই, যারা ঘুষখোর তাদের বাড়ি বা অফিসের সামনে স্টীকার মেরে দেই, তাহলে তারা কারও সামনে মুখ দেখাতে পারবে না। তিনি বলেন, আজকে কিন্তু দেখা যাচ্ছে ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ তারাই কিন্তু শক্তিশালী, অথচ তাদের সংখ্যা বেশি না।
১৭ কোটির মানুষের বাংলাদেশ তারা সবাই কিন্তু দুর্নীতির সাথে জড়িত না। এক ভাগ লোকও কিন্তু তারা না। ৯৯ ভাগ মানুষ কিন্তু ঘুষ খায়না। এক ভাগের মানুষের ধারা আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এই দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মুজাহিদ বিল্লাহ ফারুকীর সভাপতিত্বে ও উপাধ্যক্ষ প্রফেসর হারুন অর রশিদের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. মোজাফ্ফর হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুজায়েত আলী।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উম্মোচন করেন প্রধান অতিথি মির্জা আজম এমপিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। একই সাথে অতিথিবৃন্দ কলেজে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার, জামালপুর কর্ণার, ছাত্রী মিলনায়তন ভবন এবং জামালপুরে প্রথম শহীদ মিনার পুন:নির্মাণের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।