প্রতিটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কল্যাণে সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে : ধর্ম প্রতিমন্ত্রী

অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি বলেছেন, প্রতিটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কল্যাণে সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এর মাধ্যমে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি সুদৃঢ় হচ্ছে। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করায় বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা দূরন্ত গতিতে এগিয়ে চলছে।

তিনি ২৮ আগস্ট রাতে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার রাধা গোবিন্দ জিউর মন্দির প্রাঙ্গণে দুস্থদের ও বিভিন্ন মন্দিরের উন্নয়নে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের অর্থায়নে বরাদ্দকৃত উপজেলার সনাতন ধর্মের অনুসারী ৮২ জন দুঃস্থদের মাঝে ৮ হাজার করে এবং উপজেলার ১৫টি মন্দিরের উন্নয়নের জন্য প্রতি মন্দিরে ৪০ হাজার টাকা করে মোট ৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কোনো অশুভ শক্তি যেন ধর্মের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সে বিষয়ে প্রতিটি ধর্মের সকলকে সজাগ থাকতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং সা¤প্রদায়িক সম্প্রতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সরকার ২০০৯-২০২১ সময়ে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের স্থায়ী মূলধন ২১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এই প্রথম সমগ্র দেশে মন্দির ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ২২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সারাদেশে ১ হাজার ৮১২টি মঠ, মন্দির, শ্মশান সংস্কার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩টি কর্মসূচির অধীনে শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় মোট ১৯৯টি মঠ, মন্দির, শ্মশান সংস্কারের জন্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে ২০০৯ হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ৩২৪টি মন্দির, আশ্রম ও শ্মশান সংস্কার, উন্নয়নের জন্য ১৪ কোটি ৯১ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৫০ টাকার অনুদান প্রদান করা হয়েছে। ৬ হাজার ২৬২ জন দুঃস্থ হিন্দু ব্যক্তির মধ্যে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তাসহ মোট ১৮ কোটি ২৮ লাখ ৪১ হাজার ৩৫০ টাকার অনুদান বিতরণ করা হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপ‚জা উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সারা দেশের প‚জামন্ডপে ১৯ কোটি টাকা অনুদান বিতরণ ও দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ঈদগাহ, কবরস্থান, শ্মশান মেরামত বাবদ বিগত ১২ বছরে প্রায় ১৬৬.৪০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম মোরশেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইনজীবী এস এম জামাল আব্দুন নাছের, পৌর মেয়র আব্দুল কাদের সেখ, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রুকনুজ্জামান খান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী মো. আব্দুস সালাম, অধ্যক্ষ জামাল আব্দুল নাছের চার্লেস চৌধুরী চার্লেস, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আকন্দ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোজিনা আক্তার চায়না, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ইসলামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ্র সেন, কেন্দ্রীয় শ্মশান কমিটির সভাপতি রতন দত্ত, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অংকন কর্মকার, রাধা গোবিন্দ জিউর মন্দির কমিটির সভাপতি কার্তিক দত্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।