জামালপুরে প্রকাশ্য রাস্তায় ছুরিকাঘাতে নার্সিংছাত্রী গুরুতর আহত, প্রাক্তন স্বামী আটক

জামালপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় গুরুতর আহত নার্সিংছাত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে (২০) হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি দিয়ে আঘাত করে শরীর ক্ষতবিক্ষত করে পালানোর সময় জনতার হাতে আটক হয়েছেন তার প্রাক্তন স্বামী শাহীন আলম (২১)। ২৮ আগস্ট বিকেলে জামালপুর শহরের প্রধান সড়কের তমালতলা মোড়ে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। তাদের উভয়ের বাড়ি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায়।

গুরুতর আহত সাবিনাকে মুমূর্ষু অবস্থায় জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সাবিনা ইয়াসমিন শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ঝোকাকুঁড়া গ্রামের সালেহ আহমদের মেয়ে। অপরদিকে আটক শাহীন আলম একই উপজেলার গুরুচরণ দুধনই গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে একজন নারীকে গুরুতর আহত করার ঘটনাটি স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।

সূত্র জানায়, পারিবারিকভাবে সাবিনা ও শাহীন আলমের বিয়ে হয় সম্প্রতি। শাহীন আলম বেকার। সাবিনা ইয়াসমিন জামালপুর শহরের একটি বেসরকারি কারিগরি ইনস্টিটিউটে নার্সিং কোর্সের ছাত্রী। ২৮ আগস্ট সকালে নার্সিং পরীক্ষা শেষে বিকেল ৪টার দিকে জামালপুর শহরের তমালতলা এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার সহপাঠী কয়েকজন ইনটার্ন নার্সের সাথে দেখা করতে যান। বিকেল ৫টার দিকে ওই হাসপাতাল থেকে বিদায় নিয়ে নিচে নেমে রিকশায় উঠামাত্রই তার ওপর হামলা হয়।

সেখানে আগে থেকেই ওঁৎপেতে থাকা তার প্রাক্তন স্বামী শাহীন আলম রিকশা থেকে সাবিনাকে নামিয়ে রাস্তার ওপর ফেলে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন। এতে সাবিনার গলা, বুক, পীঠসহ বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় শাহীন পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। মুমূর্ষু অবস্থায় সাবিনাকে জামালপুর সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে সুস্থ করে তুলতে প্রয়োজনীয় জরুরি চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন জামালপুর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান।

এদিকে গুরুতর আহত সাবিনার বাবা সালেহ আহমদ বাংলারচিঠিডটকমকে জানান, মেয়ের জামাই শাহীন আলম নেশা করে এবং বিয়ের পর থেকেই মেয়েকে নির্যাতন করে। তিন মাস আগে মেয়েকে তালাকও দিয়েছে। তালাক হওয়ার পরও শাহীন আমার মেয়েকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল। আজকে সকালে নার্সিং পরীক্ষা দিতে জামালপুরে যায় সাবিনা। কিন্তু থানা থেকে ফোন আসে আমার মেয়ে সাবিনার ওপর হামলা করেছে শাহীন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার ন্যায়বিচার চান তিনি।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল ইসলাম খান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, সাবিনার ওপর আক্রমণকারী তার প্রাক্তন স্বামী শাহীন আলমকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। সাবিনার শরীরের গলা, বুক, পীঠসহ বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। শরীর কেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। তার বাড়িতে স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে আসতে বলা হয়েছে। তারা এলে আটক শাহীন আলমকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হবে।