সরিষাবাড়ীতে যৌতুকের কারণে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

গৃহবধূ সোমা আকতারের লাশ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় সোমা আকতার (২৫) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। ২ জুলাই সন্ধ্যায় উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের চর হরিপুর গ্রামে তার শ্বশুরবাড়ি থেকেই লাশ উদ্ধার করা হয়। যৌতুকের কারণে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন সোমাকে হত্যা করেছে বলে তাঁর বাবা অভিযোগ করেছেন। সোমা আকতার উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের চর হরিপুর গ্রামের আল আমিনের স্ত্রী ও একই এলাকার গোলাম রব্বানির মেয়ে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই জুয়েল মিয়া বাদী হয়ে ২ জুলাই রাতে থানায় মামলা করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চর হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস পিয়ন আল আমিনের সাথে পাঁচ বছর আগে সোমা আকতারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ছোট একটি মেয়ে ও ছেলে রয়েছে। আল আমিন মাদক ও জুয়া খেলায় আসক্ত। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের দাবিতে সোমার ওপর নির্যাতন চালাতেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন। ২ জুলাই বিকালে আল আমিন যৌতুক দাবি করে সোমাকে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসতে বলেন। এতে সোমা রাজি না হলে স্বামী আল আমিন তাঁকে মারধর করে। এ সময় সোমা অসুস্থ হয়ে মারা যায়। পরে স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন সোমার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে সোমা বিষ খেয়ে মারা গেছে বলে তার বাবার বাড়িতে জানায়। এদিকে পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

গোলাম রব্বানী বলেন, মেয়ের জামাই মাদক সেবন ও জুয়া খেলে টাকা নষ্ট করে। বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য তাঁর মেয়েকে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি শারীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করে। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় সোমাকে পিটিয়ে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক জানান, এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই জুয়েল মিয়া ২ জুলাই রাতে স্বামী আল আমিন, শ্বশুর রহম মন্ডল ও শাশুড়ি ময়না বেগমের বিরুদ্ধে আত্মহত্যা পরোচনা মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক থাকায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ৩ জুলাই সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়।