গৃহবধূ তানিয়া হত্যা : আসামি শ্বশুর-শাশুড়ি-ননদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নিহত গৃহবধূ তানিয়ার বাবা হাসান মাহমুদ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার গৃহবধূ তানিয়া আক্তার হত্যা মামলার প্রধান আসামি তার স্বামী আওয়ামী লীগনেতা আবু তাহেরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও মামলার অন্যান্য আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা ও হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন তানিয়ার বাবা হাসান মাহমুদ। তিনি মামলাটির অন্যান্য আসামি তানিয়ার শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদকেও গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

২৭ জুন দুপুরে জামালপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি। গত ২ জুন সকালে মেলান্দহ উপজেলার কাজাইকাটা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে নিহত হন তানিয়া আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে তানিয়ার বাবা হাসান মাহমুদ অভিযোগ করেন, নয় বছর আগে তার মেয়ে তানিয়ার (২৫) সাথে মেলান্দহ উপজেলার কাজাইকাটা গ্রামের মো. নূর ইসলাম ডেঙ্গার ছেলে শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে পাঁচ বছরের এক ছেলে ও ১০ মাস বয়সের এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। তানিয়ার স্বামী আবু তাহের বছর তিনেক আগে তানিয়ার খালার কাছে তিন লাখ টাকা ধার নেন। এই টাকা পরিশোধ করার জন্য তাগাদা দিলে তানিয়াকে শারীরিক নির্যাতন করেন আবু তাহের। স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করে সংসার করে আসছিলেন তানিয়া।

গত ২ জুন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে তানিয়া আক্তারকে নির্যাতন করে হত্যার পরে স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে এলাকায় প্রচার করেন আবু তাহের ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ওইদিন দুপুর আড়াইটায় তানিয়ার শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশীর মাধ্যমে তানিয়ার পরিবার জানতে পারেন তানিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে তানিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের ক্ষত দেখতে পান তারা। পরে ঘটনাটি মেলান্দহ থানা পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ওইদিনই আবু তাহেরের ঘর থেকে তানিয়ার মরদেহ উদ্ধার এবং তার স্বামী আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তানিয়ার স্বামী আবু তাহের, শ্বশুর নূর ইসলাম ডেঙ্গা ও শাশুড়ি তারজিনা বেগম ও ননদ লুনা আক্তারকে আসামি করে মেলান্দহ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তানিয়ার বাবা হাসান মাহমুদ।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে হাসান মাহমুদ আরও বলেন, ঘটনার দিন প্রধান আসামি আবু তাহের গ্রেপ্তার হলেও অন্য আসামিরা প্রকাশ্য ঘুরছে। তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মামলাটির বাদীসহ সাক্ষীদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। প্রভাবশালীমহলের প্রভাবে মরদেহের ময়নাতদন্তের সঠিক প্রতিবেদন না পাওয়ারও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নানা হুমকি ভয়ভীতির মুখে চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তানিয়া হত্যার ন্যায়বিচার এবং এই মামলার বাদী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগী এই পরিবারটি।