দেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে আনা রিটের পরবর্তী শুনানি ১৭ ফেব্রুয়ারি

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ বাংলাদেশে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে আনা রিটের পরবর্তী শুনানি ১৭ ফেব্রুয়ারি।

বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি নিয়ে আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন শুনানি করবেন বলে আদালত সূত্র জানায়।

১৫ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে ছয় এমিকাস কিউরির মতামত নিয়েছেন আদালত। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ৬ বিশিষ্ট আইনজীবীকে এমিকাস কিউরি নিয়োগ দেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে আনা রিটের শুনানিতে আজ মতামত দিয়েছেন ছয় এমিকাস কিউরি সাবেক এটর্নি জেনারেল সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিষ্টার কামাল-উল আলম, সাবেক এটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, আব্দুল মতিন খসরু, আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও ড. শাহদীন মালিক।

এমিকাস কিউরিগন এই রিট দায়েরের যৌক্তিকতা, রিটকারীর সংক্ষুব্ধতা, বিটিআরসি’র এখতিয়ার, এ সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন, রেফারেন্স, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিষয়ে নিজ নিজ মত তুলে ধরেন। এমিকাস কিউরিগন তাদের লিখিত বক্তব্যও আদালতে পেশ করেছেন।

‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ শিরোনামে ডকুমেন্টারি প্রচারের প্রেক্ষাপটে কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ ও এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারনের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. এনামুল কবির ইমন।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি শুনানিকালে রিট আবেদনকারীকে প্রশ্ন করা হয়- আল-জাজিরায় সম্প্রচারিত তথ্যচিত্রে তিনি কীভাবে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন, সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে রিট আবেদনের আগে সংশ্লিষ্টদের উকিল নোটিস বা ডিমান্ডিং জাস্টিস দেয়া হয়েছিল কিনা এবং এই রিটকে তিনি ‘জনস্বার্থে’ বলছেন কীভাবে। জবাবে রিটকারী আইনজীবী মো. এনামুল কবির ইমন বলেন, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন রাখতে এই রিট করা হয়েছে।’

ওইদিন শুনানিতে যুক্ত হয়ে বিটিআরসি’র আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই রাকিব বলেন, আল-জাজিরার কোন বাংলা ভার্সন নেই। কিন্তু ওই কন্টেনটি বাংলায় করেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাতে এ সংক্রান্ত ডকুমেন্টারি আর প্রচার না করা হয় সেজন্য পদক্ষেপ নিতে আদালত আদেশ দিতে পারেন। যেমনটি নোয়াখালীর এক নারীর নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পরার ঘটনায় দেয়া হয়েছিলো। আর দেশের মধ্যে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করা সম্ভব।

এ সময় ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেন, ডিমান্ডিং জাষ্টিস না দিলেও রিট করা যায়। আল-জাজিরার ওই রিলেটেড ইস্যুতে আরো পর্ব আসতে পারে। বিটিআরসির উচিত ছিলো পদক্ষেপ নেয়া। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা নিষ্ক্রিয়তা (ফেলিউর) দেখিয়েছে।

রিটকারী আইনজীবী মো. এনামুল কবির ইমন বলেন, রিটে বাংলাদেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামে সম্প্রচারিত প্রতিবেদনটি ইউটিউব, ফেসবুক ও টুইটার থেকে অপসারণের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।

রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশের আইজিসহ সংশ্লিষ্টদেরকে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়েছে।

আল-জাজিরায় ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। ইতোমধ্যে প্রতিবেদনটিকে মিথ্যা ও মানহানিকর আখ্যা দিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে সেনা সদরের তরফ থেকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিবৃতিতে ওই প্রতিবেদনকে বর্ণনা করা হয় ‘সাজানো এবং দুরভিসন্ধিমূলক’ হিসেবে।