বকশীগঞ্জের ২ শিশুকে আগুনছেঁকায় নির্যাতন

নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জে গৃহকর্মী দুই শিশুকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে আগুনের গরম খুন্তির ছেঁকা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে এক গৃহকর্তা। এছাড়া শিশু দুটির ক্ষত ঢাকার জন্য ইনজেকশনের সূচ দিয়ে রক্ত বের করার অভিযোগ উঠেছে। শিশু দুটি বর্তমানে বকশীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো শিশু দুটির বাবা-মাকে চুরির মামলার ভয় দেখাচ্ছে নির্যাতনকারী ওই গৃহকর্তা।

গৃহকর্তা রিয়াজুল ইসলামে বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোড় ইউনিয়নের পলাশতলা গ্রামের কফিল উদ্দিন মাস্টার। তিনি বর্তমানে ঢাকা সেগুনবাগিচা এলাকায় বসবাস করেন। এছাড়া তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্বপালন শেষে বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত।

নির্যাতিত শিশু দুটির বাবা শাহাজাহান মিয়া জানান, সে অতি দরিদ্র মানুষ। অভাবের তাড়নায় শিশুদুটিকে গৃহকর্মীর কাজ করতে দিয়েছিলেন। বছর খানেক আগে রিয়াজুলের বাসার কেয়ারটেকার রেজি বেগম শিশু দুটিকে গ্রাম থেকে নিয়ে ঢাকায় রিয়াজুলের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ দেন। গত সাতদিন ধরে ছেলে-মেয়েদের সাথে কোন যোগাযোগ করতে না পেরে ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় যান তিনি। ঢাকায় গিয়ে শিশু নির্যাতনের কথা শোনে শিশু দুটিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

পরে বাসায় এসে শিশুদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে সবই খুলে বলে। এ সময় প্রতিবাদ জানাতে রিয়াজুলের কেয়ারটেকার রেজি বেগমের কাছে জানাতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে তাদের আটক রেখে ব্যাপক মারধর করা হয়। এ সময় শিশু দুটির নানীর মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পায়। পরে স্থানীয়রা শিশুসহ আহত নানীকে বকশীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি নজরুল সওদাগর জানান, শিশু দুটিকে চিকিৎসার জন্য দায়িত্ব নিয়েছে বকশীগঞ্জ মানবাধিকার কমিশন। শিশু নির্যাতনকারী রিয়াজুলের দ্রুত গ্রেপ্তারেরও দাবি জানান তিনি। বকশীগঞ্জ মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে চিকিৎসার দায়িত্বও নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।