কৈডোলায় পুকুরে বিষ প্রয়োগে ৪৪ লাখ টাকার মাছ নিধন, মাছচাষীর মাথায় হাত

জামালপুরে দুর্বৃত্তদের দেওয়া বিষে মাছচাষী মিন্টু মিয়া সরকারের পুকুরের পাঙ্গাসসহ অন্যান্য দেশিয় মাছ মরে শাবাড় হয়ে গেছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরে বিশাল আয়তনের দুটি পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৪৪ লাখ টাকার মাছ নিধন করেছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। এই ক্ষতির কারণে পথে বসতে হলো জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের কৈডোলা মধ্যপাড়া গ্রামের মাছচাষী মিন্টু মিয়া সরকারকে। ৭ ডিসেম্বর গভীর রাতের এ ঘটনায় ৯ ডিসেম্বর স্থানীয় নারায়ণপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে সাধারণ ডায়েরি করে দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে ক্ষতিপূরণ আদায়সহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষী মিন্টু মিয়া সরকার এ প্রতিবেদককে জানান, সদরের শাহবাজপুর ইউনিয়নের কৌডোলা মধ্যপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ির কাছেই বছর দুয়েক আগে তিনি প্রায় তিন একর আয়তনের দুটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেন। প্রথম বছরে মাছ বিক্রি করে তেমন লাভ করতে পারেননি। দ্বিতীয় দফায় চলতি বছরের শুরুর দিকে মাছ বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে বাজার মন্দা যাওয়ায় মাছ রয়ে যায় পুকুরেই। এরই মধ্যে মাছ বিক্রি করে বাকিতে কেনা মাছের খাবারের দাম বাবদ প্রায় ১৫ লাখ টাকাসহ অন্যান্য খরচ মিটিয়ে বেশ ভালো টাকা লাভ করার স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্বৃত্তরা ৭ ডিসেম্বর গভীর রাতের কোন এক সময় দুটি পুকুরেই বিষ ঢেলে তার স্বপ্নকে চুরমার করে দিয়েছে। ওই রাতেই দ্রুত সময়ের মধ্যে দুটি পুকুরের সব মাছ মরে ভেসে উঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বিপুল সংখ্যক মানুষ পুকুরে মরা মাছ দেখতে ভিড় করেন। বিষের তীব্রতায় দুটি পুকুরের প্রায় ২২ হাজার ৫০০ টি পাঙ্গাস ও রুই কাতলা মৃগেল, তেলাপিয়াসহ প্রায় ২০০ মণ মাছ নিধন করা হয়েছে। এতে প্রায় ৪৪ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে তার।

এদিকে ঘটনার দুদিন পার হলেও এভাবে রাতের অন্ধকারে পুকুরে বিষ ঢেলে মাছ নিধনের ঘটনাটি কারা ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারেননি মাছচাষী মিন্টু মিয়া সরকার। তিনি বলেন, ৭ ডিসেম্বর গভীর রাতে যখন দুটি পুকুরের মাছ একের পর এক মরে যাচ্ছিল, তখন আমরা ধরে নিয়েছি যে উচ্চ বিষক্রিয়াসম্পন্ন গ্যাস ট্যাবলেট গুঁড়া করে পুকুরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গ্যাস ট্যাবলেটের কিছু আলামতও পেয়েছি। আমাদের সাথে কারো কোন শত্রুতা নাই। তবে পুকুর লিজ দেওয়া নেওয়া নিয়ে পুকুর মালিকের সাথে কারো কোনো পূর্ব শত্রুতা থাকতে পারে। কিংবা তৃতীয় কোন পক্ষ আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি করার জন্য উদ্দেশ্যেই হয়তো এই কাজটি করে থাকতে পারে। মাছ নিধনকারী দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়সহ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে স্থানীয় নারায়ণপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।

নারায়ণপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল লতিফ মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনের ঘটনায় মাছচাষী মিন্টু মিয়া সরকারের অভিযোগ পেয়ে তা সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করাসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।