লিয়াকত হোসাইন লায়ন, ইসলামপুর থেকে
বাংলারচিঠিডটকম
নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা না করলেও জামালপুরের ইসলামপুর পৌরসভায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। আসন্ন পৌরসভা ৫ম বারের মত নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থীরা পোস্টার, ব্যানার ছেয়ে গেছে পুরো শহর। সাধারণ ও সংরক্ষিত প্রার্থীরাও মাঠে নেমেছেন। তবে মেয়র পদে জাতীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় প্রার্থীদের মনে হতাশা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড পাড়া মহল্লায় পোস্টার ব্যানার ফেষ্টুন রং বেরঙ্গের কথা ছন্দমালা আটিয়ে দেওয়ায় প্রতিশ্রুতির জোয়ার বইছে। তবে অন্যান্য দলের কোন পোস্টার চোখে পড়েনি।
জানা গেছে, ইসলামপুর পৌরসভা ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয় ১৯৯৮ সালে। ৬.৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে ৪র্থ শ্রেণি পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৯ সালে প্রথম দফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন বিজয়ীদের ২৮ ফেব্রুয়ারি শপথ অনুষ্ঠিত হয়। আগামী নির্বাচনে ৫ম বারের মত ৩৬ হাজার ভোটার নিয়ে প্রথম শ্রেণির নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল কাদের শেক দুইবার নির্বাচিত হয়ে জনসেবা দিয়ে আসছেন। এবারো তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক, ইসলামপুর সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ পৌর এলাকায় ক্লিনম্যান হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সার্বক্ষণিক দলের জন্য শ্রম ও মেধা দিয়ে দলের কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। করোনায় ও বন্যায় নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বানভাসীদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন।
শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নূর ইসলাম নূর ৯০ এর গণ অভ্যুথানের পরিক্ষীত নেতা। দলের জন্য অনেক শ্রম ঘাম ঝরিয়েছেন তিনি। উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গীর আলম আন্দোলন সংগ্রামের সন্মুখ যোদ্ধা বিএনপি জামাতের আতঙ্ক মুজিব আদর্শের পরিক্ষীত সৈনিক, জলাবদ্ধতা, মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত আধুনিক পরিচ্ছন্ন পৌরসভা গড়ার লক্ষ্যে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে মাঠে রয়েছেন।
শহর আওয়ামী লীগের নবাগত সভাপতি দুইবারের কাউন্সিলর অংকন কর্মকার প্যানেল মেয়র হিসেবে পৌরসভার দায়িত্ব পালন করছেন। করোনা মহামারী সময়ে নিজ ওয়ার্ডসহ ৯টি ওয়ার্ডেই সাবান ও বানভাসীদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণসহ অধ্যাবধি পর্যন্ত জনগণের পাশে রয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক শাহ সালাউদ্দিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে সমর্থন নিতে সভা সমাবেশ করছেন।
এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক আইনজীবী রাহাত পাহলোয়ান, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক খলিলুর রহমান, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এ কে এম রকিবুজ্জামান লাভলু, যুব মহিলা লীগ ঢাকা দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক ডলি মোশারফ, আইনজীবী আরমানুল হাসান জারজিস দোয়া ও সমর্থন চেয়ে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যানার পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র প্রার্থী রেজাউল করিম ঢালী আবারো মাঠে নেমেছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খান দুলাল বলেন, পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। নির্বাচনে দলের কাছে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন চাইবে এটাই স্বাভাবিক। আমরা তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে নাম কেন্দ্রে পাঠাব। কেন্দ্র যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই দলীয় নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।
অন্যদিকে পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে কথা বললে তারা উন্নয়নের রূপকার কর্মবীর ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি’র উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে- আগামী নির্বাচনে আধুনিক পরিচ্ছন্ন শহর গড়তে দুর্নীতিমুক্ত, পরিচ্ছন্ন শহর এবং জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পৌরবাসীর সুবিধার্থে ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর অফিস স্থাপন, কর প্রদান, মাদক ও সন্ত্রাস নিমূর্ল, শিশুদের সুস্থ মানসিক বিকাশের জন্য সবুজ খেলার মাঠ, ফুটপাতে পায়ে হেঁটে চলাচল, ওভার ব্রিজ, আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াইফাই ইন্টারনেট এবং ময়লা আবর্জনার জন্য থাকবে নির্দিষ্ট ডাস্টবিন, সুসজ্জিত যাত্রী ছাউনিসহ পরিচ্ছন্নতা অভিযান, মশকনিধন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শহরের সৌন্দর্য্য বর্ধন, মা ও শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিককরণ, ধর্মীয় ও সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পৌরসেবা দেওয়া, নারীসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কর্মদ্যোগী করা, ভূমিহীন বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীদের জন্য আবাসন প্রকল্প, বেকার তরুণ-তরুণীদের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর প্রকল্প এবং দুর্যোগকালীন জরুরি ত্রাণ সরবরাহ করতে জবাবদিহিতামূলক একজন পরিচ্ছন্ন সেবককে দেখতে চান।