করোনাক্রান্ত সহকর্মীর হাতে ঈদের খাবার পৌঁছে দিলেন শেরপুরের এসপি

এসপি কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএম করোনায় আক্রান্ত সহকর্মীর খোঁজ নিতে ও ঈদের খাবার পৌঁছে দিতে হাসপাতালে যান। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

করোনায় আক্রান্ত সহকর্মীর খোঁজ নিতে এবং ঈদের খাবার পৌঁছে দিতে নিজেই হাসপাতালে গেলেন শেরপুরের এসপি কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএম। জেলা ট্রাফিক পুলিশে কর্মরত তার ওই সহকর্মী বর্তমানে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা আক্রান্ত রোগীদের ওয়ার্ডে সকলের চলাফেরায় বিধি নিষেধ থাকায় এসপি ওই বিল্ডিং এর বাইরে দাঁড়ান এবং সহকর্মী ওঠে আসেন ছাদে। এভাবেই এ সময় দেখা হয় দুই সহকর্মীর। এসপি নিজে খোঁজ নিতে আসায় এ সময় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ওয়াহেদুল ইসলাম।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ২ আগস্ট দুপুরে জানান, ঈদের আগের দিন (৩১ জুলাই) ওয়াহেদুল করোনা শনাক্ত হন। আর এরপর থেকেই তিনি শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন। ঈদের দিন দুপুরে এসপি স্যার তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিতে যান। এবং দুপুরের ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া তার কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে ওই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের পরিবারের খোঁজ খবর নেন।

ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ওয়াহেদ বলেন, এসপি স্যার কোন সমস্যা হলেই তাকে ফোন দিতে বলেছেন। আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তিনি সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন। ঈদে বাড়ি যেতে পারি নাই তাই স্যার আমার পুরো পরিবারের সদস্যদের জন্য জামা-কাপড়সহ নানা ধরনের উপহার সামগ্রী পাঠিয়ে দিয়েছেন। আর আমার সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখার জন্য ওসি তদন্ত মনির স্যারকে বলে দিয়েছেন। এ সময় এসপি আশরাফুল আজীমের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আবেগে গলা ভারি হয়ে আসে ওয়াহেদের।

প্রথমে জ্বর এবং গলা ব্যথা থাকলেও চিকিৎসকদের পরামর্শে ওষুধপত্র খেয়ে এখন কিছুটা সুস্থ্য বোধ করছেন বলে জানান ওয়াহেদ। তিনি বলেন, সকালে পাঁচ ও রাতে চার রকমের ওষুধ খাচ্ছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ওয়াহেদের বাড়ি পাশ্ববর্তী জেলা জামালপুর শহরের রামনগর গ্রামে। তার সংসারে স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। গত প্রায় দুই বছর আগে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে যোগদান করেন তিনি।