বকশীগঞ্জের গারো পাহাড়ে প্রথম দুই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের গারো পাহাড়ে স্বাস্থ্যকর্মী দু’জন সিএইচসিপির নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ১৩ মে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে তাদের করোনা পজেটিভ আসে। এ ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডজুড়ে গারো আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় এই প্রথম দুই স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মাঝে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন ১১০ জন। জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, জামালপুরে করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর ল্যাব চালু করা করা হয়েছে ১২ মে। ১৪ মে থেকে জামালপুরে সংগ্রহ করা নমুনা জামালপুর পিসিআর ল্যাবেই পাঠানো হবে এবং সেখানেই পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু এর আগে জামালপুর থেকে পাঠানো কিছু নমুনা ময়মনসিংহের পিসিআর ল্যাবে আটকা পড়ে আছে। ১৩ মে সেখান থেকেই জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের দু’জনের নমুনায় করোনা পজেটিভ আসে। নতুন করে আক্রান্ত এই দু’জন বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের দুটি কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) পদে চাকরি করেন। দু’জনই পুরুষ। তাদের মধ্যে লাউচাপড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপির বয়স ৩৫ বছর। তার বাড়ি লাউচাপড়া গ্রামে। অপর জন সাতানিপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপির বয়স ৩৮ বছর। তার বাড়ি একই ইউনিয়নের টেংরামারী গ্রামে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর এই তিনটি ওয়ার্ডের নয়টি গ্রামই হলো গারো আদিবাসী জনগোষ্ঠীঅধ্যুষিত এলাকা। তিনটি ওয়ার্ডে গারো আদিবাসী ও পাহাড়ি বাঙালি মিলে অন্তত সাড়ে পাঁচ হাজার পরিবার বসবাস করে। তাদের মধ্যে গারো আদিবাসীর সংখ্যাই বেশি। এই তিনটি ওয়ার্ডে এই প্রথম খোদ দু’জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হলেন। বকশীগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরবর্তী দুর্গম গারো পাহাড়ে এতদিন করোনাভাইরাসের কোন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু ওই এলাকায় দু’জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা স্থানীয় গারো আদিবাসী নারী, পুরুষ ও শিশুসহ পাহাড়ি বাঙালি পরিবারের মানুষদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গারোপাহাড়েও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়া।

জামালপুরের সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত দুই সিএইচসিপিকে তাদের বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। লাউচাপড়া ও সাতানিপাড়া গ্রামে তাদের পৃথক দুটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ১৪ মে ওই দুটি কমিউনিটি ক্লিনিকের অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে যারা এই দুই সিএসইচসিপির সংস্পর্শে গেছেন তাদের প্রত্যেকের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পাহাড়ি জনবসতি এলাকা বিধায় আমরা ওই দুটি কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ না করে বিকল্প উপায়ে সেখানে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াসহ করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ওই এলাকায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’