ক্রেতা স্বল্পতায় শেরপুরের তিন শতাধিক ব্রয়লার খামারি দিশেহারা

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

করোনাভাইরাস আতঙ্কে বাজারে ক্রেতা স্বল্পতার কারণে শেরপুরের পাঁচ উপজেলায় ব্রয়লার জাতের মুরগির দাম কেজি প্রতি কমেছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ২৭ মার্চ সকালে স্থানীয় বাজারগুলোতে ব্রয়লার জাতের মুরগি ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এতে লোকসানের মুখে পড়ে জেলার তিন শতাধিক খামারি এখন দিশেহারা। অন্যদিকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে যাচ্ছে না। আর পরিবহন সংকটের কারণে খামারিরা ঢাকা ও গাজিপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে মুরগি সরবরাহ করতে পারছে না। এসব কারণে ব্রয়লার জাতের মুরগির দাম কমে গেছে।

ব্রয়লার মুরগির খামারিরা জানান, করোনা আতঙ্কে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা খুব কম। যে কারণে জেলার সদরসহ, নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদীর হাট বাজারগুলোতে মুরগির চাহিদাও কমে গেছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ পড়ে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। আর বিক্রি করতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা তা বিক্রি করছে ৭৫ টাকায়। এতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন খামারিরা।

ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল গ্রামের খামারি খোকন ও পানবর গ্রামের সাইফুল জানান, পরিবহন সংকটের কারণে জেলার বাইরে মুরগি পাঠাতে পারছেন না তারা। যে কারণে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি মুরগিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা লোকসান ছেড়ে দিতে হচ্ছে তাদের।

সদর উপজেলার দড়ি কালিনগর গ্রামের সিরাজ মিয়া বলেন, আমার খামারের ব্রয়লার জাতের মুরগি ৩০ দিন পরিচর্যা করে ২৬ মার্চ দুই হাজার মুরগি প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এতে আমার লোকসান হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। এমন লোকসানের মুখে পড়েছে জেলার আরো তিন শতাধিক খামারি।

হাবিব পোল্ট্রি এ- ফিস ফিডের স্বত্বাধিকারী আলম মিয়া বলেন, প্রতি মাসে প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ জন খামারিকে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা দিয়ে থাকি। এখন করোনা ভাইরাস আতঙ্কে মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছে না, দেখা দিয়েছে ক্রেতা স্বল্পতা। আর এসব কারণে খামারিরা বিক্রিযোগ্য ব্রয়লার মুরগি কম দামে ছেড়ে দিচ্ছেন। অন্যদিকে আমারও মুরগির বাচ্চা সরবরাহ যেমন কমেছে তেমনি পোল্ট্রি ফিডের চাহিদাও কমছে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে এমনটা জানিয়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক এ টি এম ফায়জুর রাজ্জাক আকন্দ বলেন, এ কারণে স্থানীয়ভাবে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা কমে গেছে। এছাড়া পরিবহন সংকটের কারণে খামারিরা ঢাকা ও গাজিপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে মুরগি সরবরাহ করতে পারছে না। এসব কারণে ব্রয়লার জাতের মুরগির দাম কমে গেছে।