নকলায় ঠোঙা তৈরি করে আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন প্রায় অর্ধশত ভিক্ষুক

নকলায় ঠোঙা তৈরি করে আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন প্রায় অর্ধশত ভিক্ষুক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

শফিউল আলম লাভলু, নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুর জেলা প্রশাসন ও নকলা উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় পরিবেশ বান্ধব ঠোঙা তৈরি করে আয়ের পথ খুঁজে পেয়ে আনন্দে দিন পার করছেন অর্ধশত ভিক্ষুক। ছেড়ে দিয়েছেন পূর্বের পেশা ভিক্ষাবৃত্তি। ঠোঙা তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন তারা। দেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করায় বাড়ছে ঠোঙার চাহিদা। আর ভিক্ষুকদের বানানো এই ঠোঙা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে জেলা শহরে। এদিকে উপজেলা প্রশাসন ভিক্ষুকদের বিনামূল্যে সরবরাহ করছেন ঠোঙা তৈরির সমস্ত কাঁচামাল।

বর্তমান সরকার ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। সে মোতাবেক নকলা উপজেলার পৌরসভাসহ সবকটি ইউনিয়নের ভিক্ষুকের তালিকা প্রণয়ন করেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ। এই সব ভিক্ষুকদের মধ্যে কারো ঘর আছে, চাষের জমি নেই, কারো সন্তান নেই, কেউ বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে রোজগার করার উপায় নেই, কেউ সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে ভিক্ষার পথে নামে। এখানে-সেখানে ভিক্ষা করে তাদের জীবন চলতো। ভিক্ষার চাল বা টাকা পয়সা দিয়ে তাদের কোনোমতে সংসার চলতো। ভিক্ষাবৃত্তি চিরতরে বিদায় করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে ঠোঙা বানানোর সমস্ত কাঁচামাল। আর সে সব কাঁচামাল পেয়ে বাহিরের মানুষের কাছে হাত পাতার পরিবর্তে নিজের ঘরেই বানাচ্ছেন ঠোঙা। আর কাঁচামাল হিসেবে সবকিছু বিনামূল্যে পাওয়ায় পুরোটাই লাভ হচ্ছে বলে এসব ভিক্ষুকরা জানান।

ঠোঙা তৈরি করছেন পুনর্বাসিত ভিক্ষুকরা। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান জানান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় উপজেলার সকলের সহযোগিতায় ভিক্ষুকমুক্ত করার চেষ্ঠা করছি। তাই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঠোঙা বানানোর সমস্ত কাঁচামাল বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। বিক্রি করে যা পাচ্ছে পুরোটাই তাদের লাভ হচ্ছে এবং এ কাজে তাদের আগ্রহও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপজেলা প্রশাসন এলাকার ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু করেছে। ভিক্ষুকদের ইচ্ছা ও পছন্দানুযায়ী ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসা। তাদের অলস হাত কর্মীর হাতে রূপান্তরিত হচ্ছে। ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া ক্ষুদ্র ব্যবসা করে তারা আত্মনির্ভরশীল হচ্ছেন।