জামালপুরে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আছিয়ার বিশেষ অলিম্পিক জয়

জামালপুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের পদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকবৃন্দ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জাহাঙ্গীর সেলিম॥
বিরল প্রতিভার অধিকারী জামালপুরের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ‘গোল্ডেন গার্ল’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আছিয়া চলতি মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশেষ অলিম্পিক খেলায় অংশগ্রহণ করে সোনার পদক জয় করে দেশে ফিরেছে।

জানা যায়, জামালপুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী আছিয়া আক্তার গত ১১ নভেম্বর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশেষ অলিম্পিকে ব্যাডমিন্টন খেলার চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিয়ে বিজয় লাভ করে এবং খেলায় সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মনোনীত হয়। সদা হাস্যোজ্জল আছিয়া আক্তার জামালপুর পৌরসভার ছনকান্দা গ্রামের মৃত বাবুল মিয়া ও সুরুফা বেগমের মেয়ে।

উল্লেখ, এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য বয়ে নিয়ে আসে। চলতি বছরের মার্চ মাসে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে অংশ নিয়ে জামালপুরের ছয়জন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তিনটি রৌপ্য ও তিনটি ব্রোঞ্জ পদক পাওয়ারও গৌরব অর্জন করে। পদক প্রাপ্তরা হলো আছিয়া, শাওন, হাবিব, আনোয়ার, সিয়াম ও জোনাকী।

চলতি বছরেই বিদ্যালয়ের ছাত্রী রুপা এবং ২০১৮ সালে প্রিয়াঙ্কা অনবদ্য ও বক্তব্যধর্মী ছবি এঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। প্রধানমন্ত্রী ছবি দুটির মধ্যে একটি ঈদুল আজহা আরেকটি পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা কার্ডে ব্যবহার করেন। ছবি দুটির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে প্রধানমন্ত্রী রুপা ও প্রিয়াঙ্কাকে এক লাখ টাকা করে অর্থ পুরস্কার দেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক স্বর্ণ পদকপ্রাপ্ত আছিয়াসহ অন্যান্য পদকপ্রাপ্ত এবং ছবি আঁকার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অর্থলাভকারী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান। তিনি তাঁর কার্যালয়ে বিজয়ীদের নিয়ে সাক্ষাৎকারের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।

জামালপুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম এই প্রতিনিধিকে বলেন, প্রতিবন্ধীতার শিকার হলেও আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বিরল প্রতিভার অধিকারী। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করি ছেলেমেয়েদের অনুশীলন করাতে। প্রতিটি শিক্ষক অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পড়ালেখার পাশাপাশি সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়াসহ অন্যান্য সহশিক্ষার প্রতি যত্নবান।

প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রতি যত্নশীল শিক্ষকরা হলেন- প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম, জ্যেষ্ঠ ও সহকারী অন্যান্য শিক্ষকরা যথাক্রমে আফরোজা খানম স্বপ্না, সীমা রানী চক্রবর্ত্তী, লতিফা আক্তার লতা, আমেনা খন্দকার লিপি, হারুন অর রশিদ, ফারজানা কুদ্দুছ বাঁধন ও তন্ময় চক্রবর্ত্তী তনু।