জামালপুর পাসপোর্ট অফিসে র্যাবের অভিযান, দালাল মতি পলাতক, ৯ দালালের জেল জরিমানা
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম
র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নয়জন দালালকে আটক করে সাতজনকে তিন মাস করে কারাদণ্ড এবং দু’জনকে ৫০০ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম মো. আবু আব্দুল্লাহ খান আটক দালালদের বিরুদ্ধে এ রায় দেন। তবে অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে প্রভাবশালী চিহ্নিত দালাল মতিউর রহমান মতি পালিয়ে যাওয়ায় র্যাব তাকে আটক করতে পারেনি।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক নাজমুল আহসান হাবিবের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম মো. আবু আব্দুল্লাহ খান, র্যাব-১৪ জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার তোফায়েল আহমেদ মিয়া ও সহকারী পুলিশ সুপার জুনাঈদ আফ্রাদের নেতৃত্বে ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে বেলা ৩টার দিকে শহরের কাছারিপাড়ায় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং এর আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত দালালদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় নয়জন দালালকে আটক করে তাদেরকে ভ্রামাম্যাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
তাদের মধ্যে পাসপোর্ট অফিসে দালালি করে সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়া এবং পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ মানুষদের হয়রানি করার সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ আটক সাতজনকে দণ্ডবিধি ১৮৬০ সালের ১৮৬ ধারায় তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জামালপুর শহরের কাছারিপাড়া এলাকার মৃত কাজী শেখের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (৫৭), মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. শাহাবুদ্দিন (৫৫), সেলিম উদ্দিনের ছেলে মো. সুমন (২৮), মো. সুরুজ্জামানের ছেলে আরিফুল ইসলাম (১৮), কালা মিয়ার ছেলে মো. রানা (৩০), বাগেরহাটা এলাকার মৃত ইসহাক আলীর ছেলে মো. মাসুদ রানা রিপন (৩৮) ও মৃত শাহ শেখের ছেলে শেখ মোহাম্মদ বাদশাহ (৩৫)। তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে র্যাব।
একই আইনে আটক অপর দু’জন দালাল সরিষাবাড়ী উপজেলার চর বড়বাড়িয়া গ্রামের বাহাদুর হোসেনের ছেলে মো. মুরাদ (৩০) ও মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারীতলা গ্রামের মৃত আব্দুর রউফের ছেলে মো. মিলনকে (৪৫) ৫০০ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ সময় কাছারিপাড়া বটতলা এলাকায় পাসপোর্ট অফিসের প্রভাবশালী দালাল কোটিপতি মতিউর রহমান মতির চেম্বারে অভিযান চালান র্যাবের ভ্রাম্যামাণ আদালত। পাসপোর্ট অফিসে দালালির অভিযোগে আগে বেশ কয়েকবার আটক হয়েছিলেন তিনি। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের প্রভাব বিস্তার করে একচেটিয়াভাবে পাসপোর্ট অফিসকে ঘিরে জমজমাট দালালিবাণিজ্য করে আসছিলেন বলে র্যাবের কাছে অভিযোগ ছিল। কিন্তু অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে মতিউর রহমান মতি পালিয়ে যান। তার চেম্বার থেকে পাসপোর্ট অফিসে দালালির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে র্যাব সদস্যরা। তাকে এবং তার ছত্রছায়ায় থাকা অন্যান্য দালালদের গ্রেপ্তারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম মো. আবু আব্দুল্লাহ খান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘আটক দালালরা দীর্ঘদিন ধরে জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সরকারি কাজে বাধাদান ও সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের হয়রানি করে আসছিলেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। পাসপোর্ট অফিসকে দালালমুক্ত করতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।