জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ক্যান্টিন নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ তথ্য প্রতিমন্ত্রীর

জামালপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় বক্তব্য রাখেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. মুরাদ হাসান। ছবি : মাহমুদুল হাসান মুক্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে কোনোরুপ দরপত্র বা কার্যাদেশ ব্যতিত জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মাণাধীন ক্যান্টিনের কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. মুরাদ হাসান। ১৫ সেপ্টেম্বর জামালপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং হাসপাতালের সহকারী পরিচালককে এই নির্দেশ দেন। তিনি জেলা প্রশাসককে সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে ক্যান্টিন নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়েছে কী না, তা দেখার জন্যও অনুরোধ করেন।

সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি সুপারিশ করতে পারি কিন্তু সরকারি নীতিমালা তোয়াক্কা না করে যেমনি ইচ্ছা হাসপাতালের যেখানে সেখানে কোনো ব্যক্তি ক্যান্টিন নির্মাণ করতে পারেন না। ওই ব্যক্তিদের সাইকেল স্ট্যান্ড ভাঙার অনুমতি কে দিয়েছে জানতে চাইলে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক প্রফুল্ল কুমার সাহা কিছুই জানেন না বলে উত্তর দেন।

প্রতিমন্ত্রী বলার পরও জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বেসরকারি ক্লিনিকের অরাজকতা বন্ধে অবিলম্বে জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে তার কাছে পাঠানোর জন্য সিভিল সার্জনকে বলেন।

প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. মুরাদ হাসান সম্প্রতি জামালপুরে শিশু ধর্ষণ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইভটিজিংয়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি কোচিং বাণিজ্য বন্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসনকে বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।

উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। সভায় অন্যান্যের মধ্যে নেন পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন পিপিএম বিপিএম (বার), জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজিব কুমার সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ জলিল, জেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিমসহ জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধানগণ আলোচনায় অংশ।

সভায় জামালপুর পৌরসভার ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনা ও অপরিচ্ছন্ন নগর এবং রাস্তাঘাটের সংস্কার না হওয়ায় একাধিক আলোচক তথ্য প্রতিমন্ত্রীর সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া বিভিন্ন দপ্তর কর্তৃক কাজের অগ্রগতি আরো বেগবান করার আহ্বান জানানো হয়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক সম্প্রতি জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে দু’জন এবং বিভিন্ন সময় বাড়িতে বা অন্যান্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত করে তার কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জন চিকিৎসক গৌতম রায় ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক প্রফুল্ল কুমার সাহাকে অনুরোধ করেন।

প্রত্যেক বিভাগীয় প্রধানকে যথাসময়ের মধ্যে মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপস্থিত থাকার জন্য জেলা প্রশাসক সকলের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানান। অনেক সদস্য বা তার প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত না হওয়ায় তথ্য প্রতিমন্ত্রীও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।