রেখিরপাড়ায় সাংবাদিক আমানউল্লাহ কবিরের দাফন সম্পন্ন

উত্তর রেখিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রয়াত সাংবাদিক আমানউল্লাহ কবিরের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান স্বজন ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। ছবি : আলী আকবর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

সাংবাদিক নেতা ও জামালপুরের কৃতী সন্তান আমানউল্লাহ কবিরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ১৭ জানুয়ারি সকাল ১০টায় জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের উত্তর রেখিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জানাজা নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক আমানউল্লাহ কবিরের মরদেহ ১৬ জানুয়ারি রাতে ঢাকা থেকে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের রেখিরপাড়ায় তাঁর গ্রামের বাড়িতে নেয়া হলে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তাকে একনজর দেখতে এবং শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর স্বজনরা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাতেই ওই বাড়িতে ছুটে যান। ১৭ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে তাঁর মরদেহ স্থানীয় উত্তর রেখিরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নেয়া হয় জানাজার জন্য। সেখানেও বিপুল সংখ্যক বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার সর্বস্তরের মানুষ তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। পরে সেখানে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় সর্বস্তরে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

স্বজনরা জানায়, সাংবাদিক আমানউল্লাহ কবির ১৯৪৭ সালের ২৪ জানুয়ারি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের রেখিরপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ডায়াবেটিস ও লিভারের নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। বছর তিনেক আগে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জানুয়ারি রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও তিন ছেলে রেখে গেছেন।

সাড়ে চার দশকের সাংবাদিকতা জীবনে আমানউল্লাহ কবীর বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষার সংবাদপত্রেই কাজ করেছেন। আশির দশকে এস এম আলীর সম্পাদনায় ডেইলি স্টার প্রকাশিত হলে এর প্রথম বার্তা সম্পাদক ছিলেন আমানউল্লাহ কবির। এ ছাড়া দৈনিক নিউ নেশনের বার্তা কক্ষের প্রধান, ইংরেজি দৈনিক টেলিগ্রাফের নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক ইনডিপেনডেন্টের প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপি সরকারের সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পান তিনি। আমানউল্লাহ কবিরের সম্পাদনায় ২০০৪ সালে প্রকাশিত হয় বাংলা দৈনিক আমার দেশ। ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে সাংবাদিকদের অধিকার আদায় আন্দোলনের পাশাপাশি এরশাদের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনেও পেশাজীবীদের মধ্যে নেতৃত্বের কাতারে ছিলেন তিনি। কর্মজীবনে তিনি সর্বশেষ অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।