ট্র্যাকার ব্যবহার করা হবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন পরিমাপে

বাংলারচিঠি ডটকম ডেস্ক॥
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ২০৩০ সাল পর্যন্ত একটি সার্বজনীন অভীষ্ট, যা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো উন্নয়ন এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ করেছে। ‘কাউকে পিছিয়ে রেখে নয়’ এই প্রতিশ্রুতিই হচ্ছে এসডিজির মূল প্রতিপাদ্য। এই প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে এসডিজি অর্জনের তথ্য-উপাত্ত পারিসংখ্যানগতভাবে দৃশ্যমান করতে এবং সে অনুযায়ী সীমিত সম্পদের দক্ষ বন্টন করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচি এসডিজি ট্র্যাকার তৈরি করেছে। এই ট্র্যাকারের মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি পরিমাপ ও তদারকি করা হবে।

এটুআই, বাংলাদেশ পরিসংখ্যাণ ব্যুারো (বিবিএস) ও পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) যৌথভাবে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়কে নিয়ে এসডিজি ট্র্যাকার বাস্তবায়ন ও ব্যবহার নিশ্চিত করছে।

১৬ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার আগারগাঁও পরিসংখ্যাণ ব্যুারোর মিলনায়তনে এসডিজি ট্র্যাকার বিষয়ক পরামর্শক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। এটুআই ও বিবিএস যৌথভাবে কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক প্রধান সুদীপ্ত মূখার্জী, বিবিএস মহাপরিচালক কৃষ্ণা গায়েন ও এটুআই প্রকল্পের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে এসডিজি ট্র্যাকারের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন এটুআই হেড অব রেজাল্টস ম্যানেজমেন্ট ড. রমিজ উদ্দিন এবং বিবিএস উপ-পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশের এসডিজি লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে অন্যতম নিয়ামক হচ্ছে তথ্য-উপাত্ত নির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং প্রাধিকারভিত্তিক সম্পদের বরাদ্দ। একটি কার্যকর, তথ্যনির্ভর সমন্বিত এসডিজি পরিবীক্ষণ কাঠামো এসডিজি অর্জনে মূল ভূমিকা পালন করতে পারে। এসডিজি অর্জনে সরকারের অবস্থান ও অগ্রগতি পরিমাপ এবং উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়নে তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এসডিজি ট্র্যাকার তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, এসডিজি ট্র্যাকারকে আরো কার্যকরী, আরো ভিজুয়ালাইজড স্কীম, সকলের ব্যবহার বান্ধব ও চাহিদা মোতাবেক করতে হবে। ডাটা হালনাগাদ ও ডাটার গুণগত মান বজায় রাখতে হবে।

এসডিজি সমন্বয়ক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ কিন্তু গতানুগতিক ও স্বাভাবিক গতিতে চলছে না, বাংলাদেশ চলছে অসম্ভব গতিতে। কাজেই আপনাদেরও সেভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে এবং এগিয়ে যেতে হবে, যেন আগামী পাঁচ বছর পর বলতে না হয় কোনো ক্ষেত্রে নজর দেওয়া হয়নি। কোনো কাজ অপূর্ণ রাখা যাবে না। পূর্ণাঙ্গরুপে সব কাজ শেষ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে এসডিজির অনেক কিছুই অর্জন হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ইউএনডিপি আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মূর্খাজী তার বক্তব্যে বলেন, ইউএনডিপি এসডিজি ট্র্যাকার বাস্তবায়নে এটুআইকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করেছে। অন্যদিকে এটুআই ট্র্যাকারের উন্নয়নে অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সহায়তা দিচ্ছে। তিনি বলেন, এসডিজি ট্র্যাকারকে একটি অগ্রগতি ট্র্যাকিং এবং রিপোর্টিং প্লাল্টফর্ম হিসেবে কাজ করানোর জন্য এসডিজি থিমেটিক এরিয়া বিশ্লেষণ করা দরকার। এতে করে জাতীয় উন্নয়নের তথ্য পেতে সহায়ক হবে।

সৌরেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে এসডিজি ট্র্যাকার একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিবিএস এবং তথ্য ও পরিসংখ্যান বিভাগ এসডিজি ট্র্যাকারের মাধ্যমে উন্নয়ন পর্যবেক্ষণে এটুআইয়ের সাথে কাজ করে যাবে বলে তিনি জানান।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,ট্র্যাকার আমাদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন।বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে এ বিষয়ে মতামত নেওয়া হচ্ছে।এর অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক এবং বিশেজ্ঞদের নিয়ে কর্মশালা চলমান রয়েছে।

তিনি জানান, বিভিন্ন দেশ তাদের দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী এসডিজি ট্র্যাকার ব্যবহার করার জন্য এটুআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আমরা তাদের সহায়তা করছি।
সূত্র : বাসস