শেরপুর-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন করে ফাহিমকে চূড়ান্ত মনোনয়ন

প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী

সুজন সেন
নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন করে ফাহিম চৌধুরীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ প্রতিবেদকের কাছে ৯ ডিসেম্বর দুপুর একটায় এ তথ্য নিশ্চিত করে ফাহিম চৌধুরী বলেন, এর আগে দল এই আসনে এ কে এম মুখলেছুর রহমান রিপনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিলেও তা আজ পরিবর্তন করে আমাকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দিয়েছে এবং এ সংক্রান্ত কাগজপত্র হাতে পেয়েছি। এই আসনটিতে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ করেছে তার নির্বাচনী এলাকার বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া ৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসভবন উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর রোডের ২৩ নম্বর বসুমতি বাড়ির সামনে ওই বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন নেতা-কর্মীরা।

সূত্র জানায়, ওই সময় বিক্ষোভকারিরা কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক হুইপ প্রয়াত জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান। এ আসনে গত ৭ ডিসেম্বর সদ্য পদত্যাগী নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম মুখলেছুর রহমান রিপনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয় দলীয় হাইকমান্ড। ৯ ডিসেম্বর প্রার্থী পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে রিপন আউট এবং ফাহিম ইন করলেন।

উপজেলা বিএনপির দলীয় সূত্রগুলো জানায়, গত ২৭ নভেম্বর শেরপুর-২ আসনে বিএনপি থেকে এ কে এম মুখলেছুর রহমান রিপন, ব্যারিস্টার এম হায়দার আলী ও প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এরপর ৩০ নভেম্বর নকলা ও নালিতাবাড়ী বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ফাহিম চৌধুরীকে এককভাবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন এবং তারা ফাহিম চৌধুরী ব্যতীত অন্য কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হলে নির্বাচন বর্জন ও গণপদত্যাগের হুঁশিয়ারি দেন। কিন্তু ৭ ডিসেম্বর এ কে এম মুখলেছুর রহমান রিপনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিলে নেতা-কর্মীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং রাতেই ঢাকায় গিয়ে অবস্থান নেন। ৮ ডিসেম্বর সকালে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন ফাহিম সমর্থিত শতশত নেতা-কর্মী। ওই সময় তারা ফাহিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেন এবং রাস্তায় বসে ও শুয়ে পড়েন। এ সময় মির্জা ফখরুল বাসা থেকে বেরিয়ে গুলশান কার্যালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি নেতা-কর্মীদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ফাহিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে তাকে (ফাহিম চৌধুরী) ফখরুল তার গাড়িতে উঠিয়ে নেতা-কর্মীদের গুলশান কার্যালয়ে যাওয়ার কথা বললে অবরোধ তুলে নেন নেতাকর্মীরা। ওই সময় ফাহিম চৌধুরী ছাড়াও জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এবং শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল হক রুবেলসহ নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে এ কে এম মুখলেছুর রহমান রিপন বলেন, দলীয় হাইকমান্ড আমাকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়ার সে সম্পর্কিত সকল কাগজপত্র আমি শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিয়ে দিয়েছি। অন্যদিকে মনোনয়ন পরিবর্তন করে ফাহিম চৌধুরীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে এমন তথ্য তিনি (রিপন) জানেন না দাবি করে বলেন, দল যে কোনো সময় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারে, এটা সম্পূর্ণ দলীয় বিষয়।

প্রসঙ্গত, চার বারের সংসদ সদস্য, তিন বারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীকে শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করা হয়েছে।