দেওয়ানগঞ্জের ব্যবসায়ী সুমন খানের দাফন সম্পন্ন

সুমন খান

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কাপড় ব্যবসায়ী মেসার্স সুমন বস্ত্রালয়ের মালিক সুমন খানের (৩৯) লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে স্বজনরা লাশ নিয়ে ১০ নভেম্বর রাত সোয়া ১১টায় তার দেওয়ানগঞ্জে পৌঁছায়। রাতেই জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। ৫ নভেম্বর ভোরে ব্যবসায়ী কাজে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হন তিনি। এর পাঁচদিন পর ৫ নভেম্বর রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাস ও ৯৯৯ নম্বরে ফোনের সূত্র ধরে ঢাকার খিলগাঁও থানা এলাকায় তার লাশের সন্ধান মিলে।

১০ নভেম্বর রাত সোয়া ১১টায় দেওয়ানগঞ্জ বাজারে নিজ বাসায় ব্যবসায়ী সুমন খানের লাশ পৌঁছালে স্বজনদের মধ্যে কান্নাকাটির রোল পড়ে যায়। তাকে একনজর দেখতে ওই বাসায় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের হাজারো মানুষ ভিড় করেন। এ হত্যাকান্ডের কারণ সম্পর্কে তার পরিবারের সদস্যরাও কোনো কিছুই বলতে পারছে না।

নিহত সুমন খানের সহোদর বড় ভাই পিন্টু খান ১১ নভেম্বর দুপুরে বাংলারচিঠি ডটকমকে জানান, তার ভাই সুমন খান দোকানের জন্য তৈরি পোশাক ও অন্যান্য কাপড় কেনার জন্য ৫ নভেম্বর সারাদিন গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় কেনাকাটা করেন। তার সাথে ছিলেন তার দোকানের কর্মচারী আল আমিন (২৭) ও তারা মিয়া (৩০)। তারা কেনাকাটা শেষে রাত ১০টার দিকে একটি পিকআপ ভাড়া করে কর্মচারী আল আমিনকে সাথে দিয়ে কাপড়গুলো দেওয়ানগঞ্জের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেন। আলামিন ভোরের দিকে দেওয়ানগঞ্জে পৌঁছে যায়।

আরেক কর্মচারী তারা মিয়া কোনাবাড়ি এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় থাকার কথা বলে মালিক সুমন খানের কাছ থেকে বিদায় নেন। তারা মিয়া ওই রাতে কোনাবাড়িতে থেকে পরের দিন ৬ নভেম্বর বিকেলে দেওয়ানগঞ্জে ফিরে গিয়ে দোকানে কাজে যোগ দেয়। ফিরে গিয়ে কর্মচারী তারা মিয়া সুমন খানের পরিবারের সদস্যদের জানায়, ৫ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে মালিক সুমন খান কোনাবাড়ি থেকে বাসে করে টঙ্গীর দিকে রওনা হন। রাত ১১টার দিকে সুমন খান তাকে ফোনে বলেছিল তিনি টঙ্গীতে পৌঁছে গেছেন। তিনি তারা মিয়াকে ঠিকঠাক মতো বাড়িতে চলে গিয়ে দোকান সামলাতে বলেছিলেন।

পিন্টু খান আরো জানান, আমরা কর্মচারী তারা মিয়া ও আল আমিনের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেছি যে ওরা কিছু জানে কিনা। কিন্তু ওরা কেউই কিছুই বলতে পারছে না। তার ভাই সুমন খান খাপড় কেনার জন্য মাস খানেক আগে ইসলামী ব্যাংক জামালপুর শাখা থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার একটি টিটি করেছিল। যেদিন ঢাকায় গেছেন সেদিন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার কাপড় কিনেছেন। বাকি টাকায় আরো কাপড় কেনার পর তার জামালপুরে ফেরার কথা ছিল। তার সাথে যাতায়াতের জন্য সামান্য কিছু নগদ টাকা হয়তো ছিল। ও সাধারণত নগদ বেশি বেশি টাকা নিয়ে ঢাকায় যায় না। ব্যবসায়ীদের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমেই লেনদেন করতো।

পিন্টু খান আরো বলেন, খিলগাঁও থানায় মামলা দায়ের করা হবে। সেখানে আমরা আমার ভাইয়ের আলামত রেখে আসছি। আমরা ঢাকায় যাবো দুয়েকদিনের মধ্যে। আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কাপড় ব্যবসায়ী সুমন খান ৫ নভেম্বর ভোরে দেওয়ানগঞ্জের বাসা থেকে ঢাকার উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এ ব্যাপারে তার বাবা আব্দুল খালেক খান ৭ নভেম্বর দেওয়ানঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পাঁচদিন পর ৯ নভেম্বর রাতে ঢাকার খিলগাঁও থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশের ছবি ফেসবুকে দেখেন স্বজনরা। রাতেই ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে খিলগাঁও থানায় যোগাযোগ করে ইমোতে পাঠানো ছবি দেখে সুমন খানের লাশ বলে নিশ্চিত হন স্বজনরা।