র্যাবের অভিযানে শেরপুর জেলা কারাগার থেকে বিচারাধীন পৃথক দুটি মামলার তিনজন পলাতক হাজতি আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুরের একটি আভিযানিক দল। ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে এ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পতনের পর ৫ আগস্ট বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে কয়েক হাজার দুষ্কৃতিকারী শেরপুর জেলা কারাগারে আক্রমণ করে। এ সময় আক্রমণকারীরা জেলা কারাগারের বিবিধ স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি সাধনসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বিভিন্ন মামলার প্রায় পাঁচ শতাধিক কয়েদিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।
জেল থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর কোম্পানি, শেরপুর জেলা কারা কর্তৃপক্ষ এবং শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সরবরাহ করা পলাতক কয়েদিদের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে আসছে র্যাব-১৪। ইতিমধ্যে পলাতক আসামিদের কয়েকজন র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন।
র্যাব সূত্র জানায়, ২৩ সেপ্টেম্বর রাতের অভিযানে গ্রেপ্তার আসামি শেরপুর জেলা কারাগারের ৬৩৫/২৪ নম্বর হাজতি বিক্রম বিষু (৪৫) শেরপুর সদর উপজেলার খরমপুর গ্রামের মৃত ইন্তাজ আলীর ছেলে এবং ৬৭০/২৪ নম্বর হাজতি রুবেল মিয়া (৩৬) একই গ্রামের জামশেদ আলীর ছেলে। তারা দুজন ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগে শেরপুর সদর থানায় চলতি বছরের ১০ মার্চ দণ্ডবিধি ৩৯৯/৪০২ ধারায় দায়ের হওয়া মামলার (জিআর নং- ১২৩/২৪) পলাতক হাজতি আসামি।
গ্রেপ্তার শেরপুর জেলা কারাগারের ৫৩২/২৪ নম্বর হাজতি আমিনুল ইসলাম (৩০) একই গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে। তিনি শেরপুর সদর থানায় ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দণ্ডবিধি ৩৬(১) এর সারণির ৮(খ) ধারায় দায়ের হওয়া মাদক মামলার (জিআর নং- ৬৮৭/২০) পলাতক হাজতি আসামি। ৫ আগস্ট শেরপুর জেলা কারাগারে দুষ্কৃতিকারীদের আক্রমণের সময় অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে পালিয়ে এতদিন আত্মগোপনে ছিলেন এই তিনজন হাজতি আসামি।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জেল পলাতক এই তিনজন পলাতক হাজতি আসামিদের একই স্থানে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর কোম্পানির একটি চৌকস আভিযানিক দল। অভিযানের সময় রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে র্যাবের আভিযানিক দলটি শেরপুর সদর উপজেলার খরমপুর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে শেরপুর সদর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার এই তিনজন হাজতি আসামি ৫ আগস্ট শেরপুর জেলা কারাগারে দুষ্কৃতিকারীদের আক্রমণের ঘটনার দিন অন্যান্য কয়েদিদের সাথে কৌশলে কারাগার থেকে পালিয়ে শেরপুর জেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলায় আত্মগোপনে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। জেল পলাতক এসব হাজতি ও কয়েদিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাবের জোর অভিযান অব্যাহত থাকবে।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যার মত জঘন্য অপরাধ কর্মকাণ্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সমাজ ও দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম 
















