
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুর সদর উপজেলার জয়রামপুর গ্রামে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর সামিদুল হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি শামীম মিয়াকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪। ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মো. শামীম মিয়া জামালপুর সদর উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের গোলাম কিবরিয়া কেফুর ছেলে। র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, নিহত সামিদুল মামলাটির বাদী জামালপুর সদর উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের মো. আনিছুর রহমানের ভাই হন। আসামি হেলাল, শামীমদের সাথে আনিছুর রহমানদের দীর্ঘদিন দরে জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ৬ আগস্ট দুপুর অনুমান সাড়ে ১২টার দিকে আনিছুর রহমানরা তাদে বসতবাড়িতে কাজ করার সময় প্রতিপক্ষ ধৃত মো. শামীম মিয়াসহ অন্যান্যরা একযোগে রাম দা, লোহার শাবল, লোহার রড, বাঁশের লাঠিসহ মারাত্মক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাদীর বাড়িতে ঢুকে ভয়ভীতি দেখায়। তারা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আনিছুর রহমানের বসতঘর ভাংচুর করতে থাকে। এ সময় আনিছুর রহমানের বাবা মোকছেদ আলী বাধা দিতে গেলে প্রতিপক্ষের হেলাল তার হাতে থাকা ধারালো রাম দা দিয়ে তাকে কোপ দিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত কাটা জখম করে। এ সময় মো. শামীম মিয়া তার হাতে থাকা দিয়াশলাই দিয়ে বাদীর বসতঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেন। আগুন নেভানোর জন্য আনিছুর রহমানের বড় ভাই নিহত সামিদুল পানি দেওয়ার চেষ্টা করলে হামলাকারী হেলাল ও শামীমর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সামিদুলকে মারাত্মকভাবে জখম করে। এতে সামিদুলের দেহের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক হাড় ভাঙ্গা গুরুতর কাটা জখম হয়।
একই সময়ে অন্যান্য হামলাকারীরা সামিদুলের বাবা মোকছেদ আলীকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। তাৎক্ষণিক সামিদুল ও তার বাবা মোকছেদ আলীকে দ্রুত জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ও পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করান স্বজনেরা। সামিদুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৭ আগস্ট রাত সোয়া ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সামিদুল। ঢাকার শাহবাগ থানার পুলিশ নিহত সামিদুলের সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করেন।
নৃশংস এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. আনিছুর রহমান বাদী হয়ে ১৪ আগস্ট জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে মামলাটির আসামিরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে চলে যায়। ঘটনাটি ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট এবং অনলাইন ভিত্তিক মিডিয়ার অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
র্যাব জানায়, এ ধরনের নেক্কারজনক ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর কোম্পানির কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. আব্দুর রাজ্জাক এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ টি এম আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে র্যাবের একটি আভিযানিক আসামিদের ধরতে মাঠে নামে। ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শেরপুর জেলার সদরের বেতমারী এলাকা থেকে হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান পলাতক আসামি মো. শামীম মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র্যাব। আসামি শামীম মিয়াকে জামালপুর সদর থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে র্যা বের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গী ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ডে বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যার মত জঘন্য অপরাধ কর্মকাণ্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সমাজ তথা দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
বাংলার চিঠি ডেস্ক : 
















