নকলায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আগ্রহী করতে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

সভায় সভাপতিত্ব করেন নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া উম্মুল বানিন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

শফিউল আলম লাভলু
নিজস্ব প্রতিবেদক, নকলা (শেরপুর), বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের নকলা উপজেলায় সরকারের সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৮ মে দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া উম্মুল বানিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আম্বিয়া খাতুন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মনসুর, জেলা পরিষদের সদস্য ছানোয়ার হোসেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ, নকলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক ফারুক, বানেশ্বরদী ইউপি চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত, পাঠাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস ছালাম, নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উমর ফারুক ও জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. অনিক রহমান, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক ফকির মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রমুখ।

সরকারের এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে বক্তারা জানান, সরকার আপাতত চারটি স্কিমের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়ন কাজ শুরু করেছে। যেকোনো পেশার যে কেউ চাইলে অনলাইন প্লাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করে যেকোনো একটি পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন।

পেনশন স্কিম চারটি হলো : সমতা স্কিম যা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারীদের জন্য মাসিক এক হাজার টাকা চাঁদার মধ্যে চাঁদা দাতা দেবেন ৫০০ টাকা এবং সরকার দেবে ৫০০ টাকা। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর তারা মাসিক পেনশন পাবেন এক হাজার ৫৩০ টাকা করে।

সুরক্ষা স্কিম যা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ মাসিক এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে চাঁদা জমা করতে পারবেন। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর তারা মাসিক পেনশন পাবেন এক হাজার টাকার স্কিমের জন্য এক হাজার ৫৩০ টাকা, দুই হাজার টাকার স্কিমের জন্য তিন হাজার ৬০ টাকা, তিন হাজার টাকার স্কিমের জন্য চার হাজার ৫৯১ টাকা ও পাঁচ হাজার টাকার স্কিমের জন্য সাত হাজার ৬৫১ টাকা করে।

প্রগতি স্কিম যা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানের মালিক মাসিক ন্যূনতম দুই হাজার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে চাঁদা জমা করতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার অর্ধেক কর্মী নিজে এবং অর্ধেক চাঁদার টাকা প্রতিষ্ঠান বা মালিক পক্ষ প্রদান করবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান এই স্কিমে অংশগ্রহণ না করলেও কর্মচারীরা নিজ উদ্যোগে এককভাবে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর তারা মাসিক পেনশন পাবেন দুই হাজার টাকার স্কিমের জন্য তিন হাজার ৬০ টাকা, তিন হাজার টাকার স্কিমের জন্য চার হাজার ৫৯১ টাকা ও পাঁচ হাজার টাকার স্কিমের জন্য সাত হাজার ৬৫১ টাকা করে।

প্রবাস স্কিম যা বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী বাংলাদেশি নাগরিক মাসিক পাঁচ হাজার টাকা, সাত হাজার ৫০০ টাকা ও ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা জমা করতে পারবেন। ১০ বছর সঞ্চয়ের পর তারা মাসিক পেনশন হিসেবে পাবেন পাঁচ হাজার টাকার স্কিমের জন্য সাত হাজার ৬৫১ টাকা, সাত হাজার ৫০০ টাকার স্কিমের জন্য ১১ হাজার ৪৭৭ টাকা ও ১০ হাজার টাকার স্কিমের জন্য মাসিক পাবেন ১৫ হাজার ৩০২ টাকা করে।

এ সময় বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

অবহিতকরণ সভার পরে নকলা উপজেলার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়। সবশেষে নকলা ইউনিয়ন পরিষদ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের লক্ষ্য পূরণ করায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবকে পুরস্কৃত করা হয়।