বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা-উৎপাদনের রেকর্ড ছাড়াবে এপ্রিলে

রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। – ফাইল ছবি

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক :

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড আগামী এপ্রিল-মে মাসে ছাড়িয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। গরম বৃদ্ধি এবং সেচের চাহিদার কারণে এ চাহিদা বাড়বে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

২৮ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিদ্যুৎ ভবনে আসন্ন সেচ মৌসুমে সেচ পাম্পসমূহে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এই পূর্বানুমান এবং প্রাক্কলন করা হয়। এখন পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট উৎপাদন হয়েছে গত বছরের ১৯ এপ্রিলে। ওই সময় চাহিদার সমান জোগান না থাকায় লোডশেডিং করতে হয়েছিল। এ বছর চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদনদন বাড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আগামী জানুয়ারিতে সেচ মৌসুম শুরু হয়ে শেষ হবে এপ্রিল মাসে। গত সেচ মৌসুমে এপ্রিল মাসে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৬ হাজার মেগাওয়াট। আসন্ন ২০২৪ সালে সেচ মৌসুমে বিদ্যুতর সামগ্রিক চাহিদা ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে মোট সেচ সংযোগের সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫১টি এবং অপেক্ষমান আবেদন সংখ্যা ৯ হাজার ৪৩২টি। শুধু সেচের জন্য জানুয়ারিতে ৩৪৭ মেগাওয়াট, ফেব্রুয়ারিতে ৮৬৫ মেগাওয়াট, মার্চে ১ হাজার ৯৪৯ মেগাওয়াট, এপ্রিলে ২ হাজার ৫৯০ মেগাওয়াট এবং মে মাসে ২ হাজার ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। চাহিদা মেটাতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ১৭টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এই সেচ মৌসুমে গ্যাসের চাহিদা ১ হাজার ৭৬০ এমএমসিএফডি এবং ন্যূনতম ১ হাজার ৫৪০ এমএমসিএফডি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও ফার্নেস অয়েলের চাহিদা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন এবং ডিজেলের চাহিদা ১৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সভায় জ্বালানি বিভাগ থেকে জানানো হয়, ফার্নেস অয়েল ও ডিজেলের কোনো ঘাটতি নাই এবং চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ করা হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে পরিকল্পনা মাফিক নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। পিক-আওয়ার বাদ দিয়ে রাত্র ১১ টার পর থেকে পরের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত অফ পিক-আওয়ারে সেচ পাম্প ব্যবহারের বিষয়ে প্রচারণা করতে নির্দেশনা দেন। একইসঙ্গে সঞ্চালন লাইনের প্রয়োজনীয় মেরামত বা সংস্কার করাসহ সেচ কার্যক্রম পরিবীক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন বিতরণ সংস্থা-কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলতে নির্দেশনা দেন।

আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় অন্যান্যের মাঝে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম, পিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ রেলপথ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দপ্তর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।সূত্র:ইত্তেফাক।