দিগপাইত কলেজ : জাল সনদে চাকরি, উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম:
কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জাল সনদ দিয়ে টানা ২০ বছর ধরে সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করার অভিযোগে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. আহসান উল্লাহ ওরফে জুলহাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযোগটি নিয়ে দীর্ঘদিন তদন্তের পর ২৫ জুলাই দুদকের জামালপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক অনিক বড়ুয়া বাবু বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

জানা গেছে, অভিযুক্ত উপাধ্যক্ষ মো. আহসান উল্লাহ সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের ছোনটিয়া ডোয়াইলপাড়া গ্রামের মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে। তিনি ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে ২য় শ্রেণিতে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৯৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২য় শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ২০০৩ সালের এক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে তিনি ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক (কম্পিউটার) পদে চাকরিতে যোগদান করেন। বর্তমানে এই পদটি প্রভাষক (আইসিটি) হিসেবে গণ্য হয়। পরবর্তীতে তিনি একই কলেজে উপাধ্যক্ষ পদে পদোন্নতি পান এবং বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন। গত বছর তার বিরুদ্ধে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জাল সনদ দিয়ে চাকরিতে যোগদানের অভিযোগ যায় দুদকের ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয়ে। প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে দুদকের জামালপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে নেমে অভিযোগের সত্যতা পায়।

দুদকের মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মো. আহসান উল্লাহ দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে বগুড়ায় অবস্থিত জাতীয় বহুভাষী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নট্রামস) থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জাল সনদপত্র দাখিল করেন। তার সনদের ক্রমিক নম্বর ১৬৭৬২ এবং নিবন্ধন নম্বর ১৬৬৫৯। বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানটি নেকটার নামে কার্যক্রম চলছে। তদন্তের স্বার্থে মো. আহসান উল্লাহর কম্পিউটার সনদটি নিয়ে বগুড়ায় নেকটার (সাবেক নট্রামস) প্রতিষ্ঠানের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে সনদটি জাল বা ভুয়া বলে দুদককে তথ্য দিয়েছেন ওই উপ-পরিচালক। এই জাল সনদ দিয়ে চাকরিতে যোগদান এবং পরবর্তীতে উপাধ্যক্ষ পদে কর্মরত থেকে অধ্যাবধি পর্যন্ত সরকারি বেতন-ভাতা গ্রহণ করে আসছেন। এতে দণ্ড বিধির ৪৬৪/৪৬৭/৪৭১ এবং ১৭৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় দুদকের জামালপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক অনিক বড়ুয়া বাবু বাদী হয়ে উপাধ্যক্ষ মো. আহসান উল্লাহকে আসামি করে ২৫ জুলাই বিকেলে দুদক কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।

দুদকের জামালপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মলয় কুমার সাহা এই মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলারচিঠিডটকমকে জানান, প্রভাষক মো. আহসান উল্লাহর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি দুদক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।