জামালপুরে বিংগস প্রকল্পের সমাপনী সভা

সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

বিশেষ প্রতিবেদক:
জামালপুর ও শেরপুর জেলার পুষ্টিগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শিশু এবং মায়েদের পুষ্টি স্থিতিশীলতাকে উন্নত করার লক্ষ্যে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ইনিসিয়েটিভ টু এনহ্যান্স নিউট্রিশন সিকিউরিটি এন্ড গভরন্যান্স (বিংগস) প্রকল্পের সাড়ে পাঁচ বছর সফল বাস্তবায়ন শেষে আগামী মাসে সমাপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে ২৫ জুলাই জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদের সভা কক্ষে প্রকল্পের সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান।

সভায় ধারণা পত্র উপস্থাপন করেন বিংগস প্রকল্পের ব্যবস্থাপক জহিরুল হক। এতে অন্যান্যের মাঝে আলোচনায় অংশ নেন সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান, ফারজানা ইয়াসমিন, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম প্রমুখ। সভায় কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ, মহিলা বিষয়কসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, উপকারভোগী, স্বেচ্ছাসেবকগণ অংশ নেন।

সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সভা সূত্রে প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানা যায়, স্থানীয় বিভিন্ন বিভাগের কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশু পরিচর্যাকারী, পাঁচ বছরের নীচে শিশু, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মা এবং কিশোরীদের পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের উন্নয়ন করা। সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রো পুওর গভরন্যান্সের মাধ্যমে পুষ্টি সম্পর্কিত গুণগত মান ও সেবা বৃদ্ধি করা। উন্নত পারিবারিক খাদ্য উৎপাদন, আয় বৃদ্ধি এবং পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমতা ও সংবেদনশীল পুষ্টি মূল্যক্রমের মাধ্যমে পারিবারিক খাদ্য গ্রহণের হার বৃদ্ধি। স্থানীয় জনসাধারণ, বেসরকারি পুষ্টি অংশীদার এবং স্থানীয় পুষ্টি কার্যক্রমের সমর্থনকারীদের মধ্যে আন্তঃসমন্বয় করা।

উল্লেখ, এক লাখ ৫৩ হাজার ৮২৫টি দরিদ্র ও হতদরিদ্র পরিবার নিয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। এরমধ্যে ৯৩ হাজার ৮৭ জন চার বছরের নীচের বয়সি শিশু, ৫০ হাজার ৭৩২ জন গর্ভবতী দুগ্ধদানকারী নারী এবং ৪৪ হাজার ৭৩৫ জন কিশোরী রয়েছে। এই সংখ্যার মধ্যে আট হাজার ৮৪৬ জন প্রতিবন্ধী শিশু এবং ছয় হাজার ৮০৪ জন প্রতিবন্ধী নারী ও কিশোরী রয়েছে। ইউরোপিয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় ওয়ার্ল্ড ভিশন ও উন্নয়ন সংঘ জামালপুর ও শেরপুর জেলায় সাড়ে পাঁচ বছরব্যাপী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়।

প্রকল্পের অর্জনের বিষয়ে জানা যায় খর্বাকায় শিশুর হার কমেছে দেড় ভাগ, কৃষকায় শিশুর হার কমেছে দুই ভাগ, ৫ বছরের কম বয়েসী কম ওজনের শিশুর হার কমেছ ৩ ভাগ, প্রজনন বয়সী নারীদের ন্যূনতম বিভিন্ন খাদ্য বৈচিত্র গ্রহণের হার বেড়েছে ১২ ভাগ, গর্ভবতী মায়েদের আয়রন বড়ি সেবনের হার বেড়েছে ৫ ভাগ, জিংক সমৃদ্ধ ভাত খাওয়া ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর হার বেড়েছে ১৫ ভাগ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছে ১০ ভাগ, পুষ্টি সংক্রান্ত পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছে ১০ ভাগ।

আলোচকরা বিংগস প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা এলাকায় পুষ্টিহীনতা দূরিকরণ এবং এ সংক্রান্ত সহকার্যক্রম শতভাগ অর্জনের জন্য ওয়ার্ল্ড ভিশন এবং দাতা সংস্থা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে প্রকল্পটি সম্প্রসারণের উদাত্ত আহ্বান জানান।