ইসলামপুরে জিগাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শতাধিক বসতবাড়ি যমুনার গর্ভে বিলীন

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, ইসলামপুর প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের ইসলামপুর যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে প্রতিনিয়ত ছোট হয়ে আসছে উপজেলার মানচিত্র। এ বছর বর্ষার শুরুতেই যমুনা নদীতে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গেলো এক সপ্তাহ ধরে চলা নদী ভাঙ্গনে ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দি ইউনিয়নের জিগাতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কাঠমা এলাকায় শতাধিক বসতবাড়ি, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে থাকায় নদী তীরবর্তী মানুষেরা বসতবাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। সবহারানো মানুষগুলোর শেষ আশ্রয় হয়েছে খোলা আকাশের নিচে।

জানা গেছে, টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আবার কমতে শুরু করেছে। বর্ষার শুরুতেই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গন। গেলো এক সপ্তাহের ভাঙ্গনে নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কাঠমা এলাকায় গাছপালা, ফসলি জমি, কবরস্থানসহ শতাধিক বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। যমুনার অব্যাহত ভাঙ্গনে সব হারিয়ে প্রতিদিনই নিঃস্ব হচ্ছে নদী তীরবর্তী মানুষেরা। নিঃস্ব মানুষগুলো এখন মাথাগোজা ঠাঁই হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনপার করছেন। বিশেষ করে রাতের অন্ধকার আর বৃষ্টি নামলেই নদী যেন হিংস্র হয়ে উঠে, মুহুর্তে মুহুর্তে মানুষের ভিটেমাটি আছড়ে পড়ে যমুনার বুকে। তাই ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন নদী তীরবর্তী মানুষেরা। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে থাকায় নদী তীরবর্তী মানুষ প্রতিদিন নিজেদের বসতবাড়িসহ শেষ সম্বল ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এখনো হুমকির মুখে কাঠমা এলাকার শত শত বসতবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গাছপালা, ফসলি জমিসহ টগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। নদী ভাঙ্গনের শিকার মানুষগুলো বলছেন, গেলো তিন বছর ধরে এই এলাকায় নদী ভাঙ্গন হচ্ছে, ইতিমধ্যে ভিটেমাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে নি:স্ব হয়েছেন অনেক পরিবার। ভুক্তভোগীরা বলছেন, অস্থায়ীভাবে নদী ভাঙ্গন রোধ আর ত্রান সহায়তা চান না তারা। তাদের দাবি নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী সমাধান।

নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রোমান হাসান জানান, এই এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে বাঁধ নির্মানের জন্য আবেদন করা হয়েছে, আশা করা যায় সেটি বাস্তবায়ন হবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে ইতিমধ্যেই জরুরি বরাদ্দের জন্য প্রস্তবনা পাঠানো হয়েছে এবং দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে। তবে এই এলাকায় স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধে কাজ করতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে সমিক্ষা প্রকল্প চলমান রয়েছে। সেটি পাশ হলেই স্থায়ীভাবে কাজ শুরু করবো।