জেলা কৃষকলীগের সভাপতি জিন্নাহর আর্থিক প্রতারণা নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

জামালপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী মাহাবুব আলাম। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুর জেলা কৃষকলীগের সভাপতি সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহর বিরুদ্ধে কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ২১ মে দুপুরে জামালপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডেকে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী জামালপুর সদরের শরিফপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আইনজীবী সহকারী মাহাবুব আলম ও শহরের জিগাতলা এলাকার গৃহিনী মুক্তা খানম।

সংবাদ সম্মেলনে মাহাবুব আলম অভিযোগ করে জানান, তিনি সৌদী প্রবাসী থাকা অবস্থায় একই এলাকার বাসিন্দা জেলা কৃষকলীগের সভাপতি সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহ কিছু জমি কিনে রাখার কথা বলে তার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নেন। এরপর এলজিইডির ঠিকাদারি ব্যবসায় বিনিয়োগের কথা বলে তার কাছ থেকে আরো ৫৫ লাখ টাকা নেন। এই এক কোটি পাঁচ লাখ টাকার লেনদেনের উভয়পক্ষের স্বাক্ষরযুক্ত অঙ্গীকারনামা ও ব্যাংক হিসাবের প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহ তার টাকা ফেরত দেননি। তার সাথে এই আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ এনে তিনি সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহ ও তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগমকে বিবাদী করে জামালপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। একটি মামলা জামালপুর সদর থানায় তদন্তাধীন রয়েছে। অন্য মামলাটি সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে বিচারাধীন রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা করায় তিনি এবং তার পরিবারের লোকজন মাহাবুব আলমকে হুমকিসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। গত ১৭ মে একটি মামলার শুনানিতে আদালত সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহর জামিন বাতিল করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। কিন্তু একই দিন সন্ধ্যার মধ্যে বিশেষ আদালত থেকে তিনি জামিনে মুক্ত হন। তিনি এই অভিনব প্রতারণার সুবিচার চান।

জামালপুর শহরের জিগাতলা এলাকার আরেক ভুক্তভোগী গৃহিনী মুক্তা খানম অভিযোগ করে বলেন, সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহ আমার ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ২০২১ সালে আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নেন। কিন্তু পরবর্তীতে আমার ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে পারেন নাই। আমার টাকাগুলোও ফেরত দিচ্ছেন না। আমি তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। মামলা দায়েরের পর টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে উল্টো তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। আমাকে নানাভাবে হুমকি, ভয়ভীতি ও হয়রানি করে আসছেন। আমার কষ্টে অর্জিত টাকাগুলো ফেরতসহ তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

জামালপুর প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষকলীগের সভাপতি সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহ। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

ওই সংবাদ সম্মেলনের কিছুক্ষণ পর জেলা কৃষকলীগের সভাপতি সৈয়দ মোখলেছুর রহমান জিন্নাহ একই স্থানে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি মাহাবুব আলম ও মুক্তা খানমের কাছ থেকে কোনো প্রকার টাকাপয়সা নেইনি। তারা আমার এবং আমার স্ত্রীর সাক্ষর জাল করে টাকা লেনদেন ও অন্যান্য অঙ্গীকারনামার ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মিথ্যা অভিযোগে আমার এবং আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে। বর্তমানে তিনটি মামলা চলমান আছে। মাহাবুব আলম একজন প্রতারক ও মামলাবাজ। তার আইনজীবী সহকারী সনদ নেই। আমার কাছে সকল প্রমাণ রয়েছে। আমি মামলাগুলো আইনিভাবেই লড়বো।

তিনি আরো বলেন, আমি যেহেতু রাজনীতি করি। আমার কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হয়তো আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই মাহাবুব আলম ও মুক্তা খানমকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করিয়ে আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে।