মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে মারধর করে বসতভিটা ছাড়া করার অভিযোগ

ভুক্তভোগী পরিবার হেল্পলাইন ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনী সহায়তা দেন।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে মারধর করে বসতবাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ ওঠেছে। পরে ভুক্তভোগী পরিবার হেল্পলাইন ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনী সহায়তা দেন। ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বারইপটল এলাকার ফকিরবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাদল ফকির মারা যান। এরপর থেকে স্বামীর বাড়িতে দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন স্ত্রী শিউলী বেগম। তখন থেকে অসহায় এ পরিবারের ওপর নানাভাবে অত্যাচার শুরু করেন দেবর সৈকত ও তার পরিবারের লোকজন। অত্যাচার সইতে না পেরে ৪ বছর পূর্বে সন্তানদের নিয়ে সদর উপজেলার সোনটিয়া এলাকায় চলে যান শিউলী বেগম। সেখানে মেয়ে জামাতা হারুন অর রশিদের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন তিনি। এ সুযোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদল ফকিরের জমিজমাসহ বসতঘর হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা শুরু করেন দেবর সৈকত মিয়া। মাঝে মধ্যে শিউলী বেগম বাড়িতে আসলেও তাকে ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

একপর্যায়ে ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ওই মুক্তিযোদ্ধার বসতঘর ভেঙ্গে নিঃশ্চিহ্ন করে ফেলার চেষ্টা করেন সৈকত। খবর পেয়ে শিউলী আক্তার মেয়েদের নিয়ে বারইপটল স্বামীর বাড়িতে আসেন। তাদের দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন সৈকত। একপর্যায়ে তাদের মারধর করে বসতবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ এ কল করে আইনী সহায়তা চান শিউলী বেগম।

ভুক্তভোগী শিউলী বেগম বলেন, তার স্বামীর মৃত্যুর পর নানাভাবে অত্যাচার শুরু করে সৈকত ও তার পরিবারের লোকজন। এ কারণে তিনি বাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। প্রায়ই তিনি বাড়িঘরে আসতেন। তবে তাকে বাড়ির আঙ্গিনায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মুক্তিযোদ্ধার বসতঘরে গরুর খামার গড়ে তুলে দেবর সৈকত। তাকে না জানিয়ে তার বসতঘর ভেঙ্গে ফেলতে শুরু করে সৈকত। বাধা দিলে তাকেসহ তার মেয়ের জামাতাকে মারধর করে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে দেবর সৈকত হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিউলী বেগম ও তার সন্তানরা বাড়িঘরে আসেন না। এ কারণে তাদের বসতঘর ভেঙ্গে ব্যবহার উপযোগী করা হচ্ছে। তাছাড়া এ বাড়িতে তাদের কোন অংশ নেই।

রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে আসা আজাহার আলী জানান, ৩০-৩২ বছর পূর্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাদল ফকির এ ঘরটি বানিয়ে ছিলেন।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বলেন, এ পরিবারটি খুবই অসহায়। কোনভাবেই এ পরিবারটিকে এ বাড়িতে টিকতে দেওয়া হয়নি। নানাভাবে তাদের সম্পত্তি জবর-দখলের চেষ্টা চালায়। বাধা দিতে গেলে তাকে মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসতঘরসহ জমিজমা জবর-দখল করে নেওয়া হচ্ছে মর্মে ৯৯৯ থেকে থানায় ফোন আসে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে আইনী সহায়তা দেওয়া হয়।