মেলান্দহে ইউপি ভূমি কর্মকর্তার ঘুষবাণিজ্যের তথ্য নিতে গিয়ে দুই সাংবাদিক লাঞ্ছিত

চরবাণী পাকুরিয়া ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম : জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার চরবাণী পাকুরিয়া ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ছানাউল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারি, দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগের বিষয়ে জানতে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ করে ধাক্কা দিয়ে ভূমি অফিস থেকে বের করে দেন। ২৫ জানুয়ারি বেলা ১২টার দিকে চরবাণী পাকুরিয়া ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

ওই দিন রাত ৭টার দিকে মেলান্দহ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক। ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক আজকের পত্রিকার মেলান্দহ উপজেলা প্রতিনিধি রকিব হাসান নয়ন ও ভোরের কাগজের মেলান্দহ উপজেলা প্রতিনিধি সাকিব আল হাসান।

ভুক্তভোগী ওই দুই সাংবাদিক জানান, ২৫ জানুয়ারি বেলা ১২টা দিকে ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ছানাউল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারি, দুর্নীতি ও অসদাচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, কে অভিযোগ করেছে তাঁর নামে মানহানি মামলা করব। আমার অফিসে সাংবাদিক আসলে ইউএনও অফিস থেকে অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। অনুমতি নিয়ে এখানে আইছোস কি তোরা। পরে ঘুষ কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রশ্ন করলে চেয়ার থেকে উঠে রুম থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক রকিব হাসান নয়ন বলেন, ২৫ জানুয়ারি দুপুরে ভূমি অফিস কার্যালয়ের সামনে মেলান্দহ পৌর শহরে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার সময় দেখি ভূমি কার্যালয়ে জমি সংক্রান্ত ও ঘুষ কেলেঙ্কারি নিয়ে বাকবিতণ্ডা চলছে। পরে ওই ভূমি অফিস কার্যালয়ে যাই আমরা। পরে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারি, দুর্নীতি ও অসদাচরণ ও তাঁর দরজা বন্ধ করে ঘুষ বাণিজ্যের বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাকিব আল হাসান বলেন, ভূমি কর্মকর্তা ছানাউল ইসলামের বিরুদ্ধে কয়েকদিন আগেই ঘুষ কেলেঙ্কারি, দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগে করেন মুক্তা বেগম নামে এক স্বামী পরিত্যক্ত নারী। ২৫ জানুয়ারি দুপুরে ভূমি অফিসের সামনে দিয়ে যাবার পথে দেখি বাকবিতণ্ডা চলছে। পরে আমারা ওই ভূমি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে গেলেই আমাদের সাথে অসদাচরণ ও লাঞ্ছিত করে বের করে দেন। ওই কর্মকর্তা বিরুদ্ধে ইউনিয়নের শত শত মানুষের অভিযোগ রয়েছে।

মুক্তা বেগম নামে একজন অভিযোগ করে বলেন, ৫ শতাংশ জমি খারিজ (নামজারি) করতে আমার কাছে থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়েছে ছানাউল। পরে খারিজের কাগজ ইউএনও অফিস কাগজ নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, ছানাউল আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমার সাথে অসদাচরণ করে।

স্থানীয়রাও ওই ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারি, দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ করেন জানান, চরবাণী পাকুরিয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রুমে দরজা বন্ধ করে ঘুষ নেন। তাঁর কাছে কোন ধরনের কাজ নিয়ে গেলে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। ভূমি কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাঁর ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ করতে মানববন্ধন করবেন বলেও জানান।

এবিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে চরবাণী পাকুরিয়া ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম বলেন, আমার সাথে কোন ঘটনা ঘটেনি। এই বলেই মোবাইল ফোন কল কেটে দেন।

মেলান্দহ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা বলেন, এ বিষয়ে আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ওই ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।