ফুটবল-সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ: ভারতকে হারালেও সতর্ক বাংলাদেশ

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ সাফ ওমেন চ্যাম্পিয়নশীপে গতকাল শক্তিশালী ভারতকে হারিয়েও বেশ সতর্ক বাংলাদেশ। আনন্দের জোয়ারে গা ভাসিয়ে দিতে চান না টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। যে কারণে ভারতের বিপক্ষে বড় একটি জয় পাবার পরও বিশ্রামে না গিয়ে আজও যথারিতি অনুশীলন সেরেছে কোচ গোলাম রব্বানি ছোটনের শিষ্যরা। আজও প্রতিদিনের মতো আর্মি হেডকোয়ার্টার্স মাঠে অনুশীলনে ঘাম ঝড়িয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। তবে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই দ্বিগুন উৎসাহ নিয়ে অনুশীলণ করতে দেখা গেছে দলকে।

এর কারণও আছে। যেহেতু এবারের দলটির মুল লক্ষ্য শিরোপা জয় করা। তাই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই তৃপ্ত নয় দলটি। যদিও টুর্নামেন্টের সেরা দল ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতকে ৩-০ গোলে পরাজিত করেছে সাবিনা খাতুনরা। তারপরও ফাইনালে আরো শক্তি নিয়েই বাংলাদেশের পথ রোধ করে দাঁড়াতে পারে উপমহাদেশের শক্তিশালী ভারত। এছাড়া বি গ্রুপ থেকে শেষ চারে আসন নিশ্চিত করা ভুটানকেও বেশ দক্ষ প্রতিপক্ষ হিসেবে ভাবা হচ্ছে। যে কারণেই সবার এমন সতর্কতা।

অনুশীলন শেষে বাংলাদেশ দলের স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না বলেন,‘ ভারতকে হারানোর পর উল্লাস যা করার এখানেই করেছি। হোটেলে যাবার পর ডিনার করেছি এবং অনেকের পায়ে ব্যাথা ছিল, তারা আইস বাথ করেছে আর চিকিৎসা নিয়েছে। সব মিলিয়ে এখন আমাদের লক্ষ্য সেমি-ফাইনালের জন্য প্রস্তুত হওয়া।

তিনি বলেন,‘ এই মুহুর্তে আমাদের মুল্য লক্ষ্য ফাইনাল। যেহেতু আমাদের লক্ষ্য ফাইনালে খেলা, তাই সেটি পুরণ করতে হলে অবশ্যই সেমি-ফাইনালের বাঁধা টপকে যেতে হবে। ভুটানও অনেক ভালো দল। প্রতিপক্ষ কোন দলকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। আগের ম্যাচের মতো ধারাবাহিকতা রেখে সেমি-ফাইনালেও খেলতে চাই। আশা করি ভালো একটি খেলা উপহার দিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করতে পারব।’

ভারতকে হারানোর পর আজকের দিনটি কিছুটা আলাদা উল্লেখ করে স্বপ্না বলেন, ভারত অবশ্যই আমাদের চেয়ে ভালো দল। ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন। তাদের বিপক্ষে জয়ের অনুভুতি কেমন হবে তা অবশ্যই বলার অপেক্ষা রাখেনা।’

ডিফেন্ডার শিউলি আজিম বলেন,‘ ম্যাচ জয়ের পর ভিন্ন ভাবে উদযাপনের কারণ হচ্ছে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য আমাদের মধ্যে যে ডিটারমিনেশন ছিল আমরা তা করতে পেরেছি। তবে এর আনন্দ যা করার মাঠেই করেছি। আজ সকাল থেকে আমাদের মধ্যে সেটি আর নেই। এখন থেকে আমাদের পুর্ন মনোযোগ সেমি-ফাইনালে। ফাইনালে যাবার পথে এটি খুবই গুরুত্বপুর্ন ম্যাচ।

সেমি-ফাইনালের প্রতিপক্ষ ভুটানও বেশ শক্ত প্রতিপক্ষ। যোগ্যাতা দিয়েই তারা শেষ চারে উঠেছে। সুতরাং তাদেরকে খাটো করে দেখার কোন সুযোগ নেই। অবশ্য আমরা জয়ের জন্যই সেমি-ফাইনালে নামব।’

গতকাল ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ে মুখ্য ভুমিকা পালনের মাধ্যমে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাওয়া কৃষ্ণা রানী সরকার বলেন,‘ ভারতের সঙ্গে জিতেছি। এতে সবাই খুশী। তবে সামনে দু’টি ম্যাচ রয়েছে। সেমি-ফাইনাল এবং ফাইনাল। এই দু’টি জিতে শিরোপা নিয়েই উল্লাস করতে চাই।’

তবে ওই জয়টিকেও গুরুত্বপুর্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আসলে সিনিয়র পর্যায়ে এটাই আমার সেরা ম্যাচ। ভারতের বিপক্ষে জেতা সবচেয়ে বড় অর্জন। একটি ফাইটিং ম্যাচ ছিল। ওই ম্যাচে আমি গোল করতে পেরেছি। সব মিলিয়ে আমার কাছে এই ম্যাচটি এই মুহুর্তে সেরা।’

শুরুতে সিনিয়র বিভাগে আমাদের ৫/৬টি করে গোল হজম করতে হতো। এখন দলে অনেক পরিবর্তন এসেছে। প্রায় ছয়.সাত বছর হয়ে গেছে এক সঙ্গেই আমরা আছি। ২০১৬ সাল থেকে। তাই স্যার (কোচ) যেটা বলেছেন, সেটাই ঠিক। আমাদের মেয়েদের ফুটবলে দিনবদলের পালা শুরু হয়েছে। যার প্রমাণ ভারতের বিপক্ষের ম্যাচটি।’

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, সাফে এই ভারতেকে কেউই হারাতে পারেনি। বাংলাদেশ,নেপাল কেউই না। আমরা হারিয়েছি। আমরা যে বিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামি এবং যে কঠোর পরিশ্রম করে এসেছি তার প্রমান এটি। এখন যদি সৃস্টিকর্তা সহায় হন তাহলে ট্রফি বাংলাদেশে নিয়ে যাবো আমরা।