২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে প্রযুক্তিজ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ : জুনাইদ আহমেদ পলক

জামালপুরে হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ছবি : মাহমুদুল হাসান মুক্তা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে প্রযুক্তিজ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশের আধুনিক রূপ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে হাইটেক পার্কগুলোই হবে মূল অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি।

২ জুলাই জামালপুর পৌরসভার মুকুন্দবাড়ী এলাকায় জামালপুর আইটি/হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির বীর মুক্তিযোদ্ধা গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এসব কথা বলেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ১৯৭৫ সালে যখন স্যাটালাইট প্রযুক্তিটাই নতুন, তখন বঙ্গবন্ধু চিন্তা করলেন সারাবিশ্বের ইন্টারনেটের সাথে বাংলাদেশকে যুক্ত করতে হলে এখানে ভূ-উপগ্রহ স্টেশন স্থাপন করতে হবে। বিজ্ঞাননির্ভর প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়াতে প্রথম ভূ-উপগ্রহ স্টেশন স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা ও দূরদর্শিতার ফলে একটা স্বল্পোন্নত দেশকে ১৩ বছরের ব্যবধানে একটি প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল উন্নয়নশীল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি আর শ্রমনির্ভর থাকবে না। বাংলাদেশে প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পখাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ বেড়েই চলেছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের বুদ্ধিদীপ্ত ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং সময়োপযোগী তত্ত্বাবধানের কারণে মাত্র ১৩ বছরের মধ্যে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, সুলভমূল্যে ইন্টারনেট সেবা, ডিজিটাল সার্ভিসেস ও প্রযুক্তি শিল্পের বিকাশ-এই চারটি শক্তিশালী স্তম্ভের ওপরে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। এই ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রথম শর্তই ছিল দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা। এ দেশের তরুণরা যেন শুধু সনদনির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়ে যেন প্রযুক্তিগত শিক্ষায় দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হতে পারে- সেই লক্ষ্যেই উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা পর্যায়ে ১২টি হাইটেক পার্কসহ সব মিলিয়ে সারাদেশে ছোট বড় ৯২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করছেন।

তিনি বলেন, জামালপুরে ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সোয়া ৫ একর জমিতে আইটি/হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হবে। আজকে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে গেলাম। আশা করি আগামী দুই বছরের মধ্যে এটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাবে। এখানে প্রতিবছর এক হাজার তরুণ-তরণীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়া এই পার্কে প্রত্যক্ষভাবে তিন হাজার তরুণ তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। জামালপুরের ছেলে-মেয়েরা এসএসসি, এইসএসসি পাশ করে এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে জামালপুরে বসেই ইউরোপ আমেরিকার বড় বড় কোম্পানিতে কাজ করতে পারবেন।

জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. মোজাফ্ফর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি। এছাড়া অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায়, জেলা পরিষদের প্রশাসক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন, ফ্রি-ল্যান্সার জান্নাতুল ফেরদৌসী ও সাইফুর রহমান হৃদয় প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আর্নিং এন্ড লার্নিং প্রকল্পের আওতায় ২২ জন প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ল্যাপটপ কম্পিউটার বিতরণ করেন।