বকশীগঞ্জে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পদচারণা বেড়েছে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীদের

বকশীগঞ্জে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নেমেছেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও আওয়ামী লগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিস্টার ছামির সাত্তার। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু, বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে এখনো প্রায় দেড় বছর বাকি। ওই নির্বাচনকে ঘিরে এখনই মাঠে নেমেছেন সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীরা।

গত দুই মাস ধরে নিবাচনী এলাকা বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জে আসা যাওয়া বেড়েছে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশিদের । সম্ভাব্য এসব প্রার্থীরা রাজনীতির মাঠ গরম করতে উঠেপড়ে নেমেছেন।

এমন চিত্র এখন প্রায় দেখা যাচ্ছে জামালপুর-১ আসনে (বকশীগঞ্জ-দেওয়ানগঞ্জ)। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বাড়িয়ে দিয়েছেন এলাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ।

জানা গেছে, জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত জামালপুর-১ আসন। দেশ স্বাধীনের পর থেকে সিংহভাগ সময় আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে এই আসনটি।

সর্বশেষ ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে পাঁচ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাবেকমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ।

আগামী দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে পূর্বের মত এলাকায় আসা যাওয়া করছেন বর্তমান এমপি আবুল কালাম আজাদ। সম্প্রতি তার আসা যাওয়া আরো বেড়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনেও চমক দেখাতে প্রস্তুত হচ্ছেন প্রবীণ এই সাংসদ।

দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তরুণ রাজনীতিবিদ ও ক্লিন ইমেজের সম্ভাব্য প্রার্থী ব্যারিস্টার ছামির সাত্তার। তিনি ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের প্রভাবশালী আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। বিগত ৭ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাণী ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

যেকোন দুর্যোগে ও প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি। ২০২০ সাল ও ২০২১ সালে করোনা মহামারীর সময়ে কর্মঅক্ষম মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং প্রায় কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করেন অসহায়, দুস্থদের মাঝে।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর টানা মাঠে কাজ করছেন তরুণ রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার ছামির সাত্তার। আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি হয়ে প্রতি মাসেই এলাকায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। গণসংযোগ, সামাজিক কর্মকাণ্ডসহ জনসম্পৃক্ত সকল কাজে জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

বর্তমানে তাকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরের জনতার মধ্যে।

বকশীগঞ্জে সম্প্রতি জনসাধারণের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমান পান্না। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমান পান্না। তিনিও আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি হিসেবে মাঠে ঘন ঘন যাতায়াত করছেন। গণসংযোগ করছেন এই দুই উপজেলাতেই। বর্তমান সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘ সময়। প্রতি মাসে তিনিও তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে এলাকায় ঘুরাঘুরি শুরু করছেন কৃষিবিদ মোখলেসুর রহমান পান্না। এলাকায় তার পরিধি বাড়াতে আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন তিনি।

মাঠে রয়েছেন বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ। গত ২০০৮ সালে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি বকশীগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেছেন।

নতুন করে নেমেছেন আরেক সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী তাওফিক হোসেন খিজির নামে এক ব্যবসায়ী। দেয়ালে, অলি গলিতে ছাঁটিয়েছেন নিজের ব্যানার, ফেস্টুন। সম্প্রতি তারও আনা গোনা বেড়েছে বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জে।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে সরাসরি ঘুরাফেরা করলেও কৌশলে মাঠে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে চায় বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

২০০১ সালে এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত এমপি নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী হয়ে।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কৌশলে পূর্বের জনপ্রিয়তা ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ২০০১ সালে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে উঠেন সাবেক সাংসদ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত। তাই এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে চান তিনি।

সম্ভাব্য প্রার্থীদের হঠাৎ তোড়জোর নিয়ে নতুন করে রাজনীতিতে মৃদু উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। একজনের দেখাদেখি আরেক জন আসা শুরু করেছেন এলাকায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ওপর নির্ভর করবে রাজনীতির গতিপথ। সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও দেড় বছর।