দেওয়ানগঞ্জে নদ-নদী এখন ফসলের মাঠ

জিঞ্জিরাম নদীতে বোরো চাষ করা হয়েছে। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

বিল্লাল হোসেন মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার নদ-নদী এখন ফসলের মাঠ। যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম, দশানী, নদ-নদীগুলো অতীত ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে কালক্রমে নাব্যতা হারিয়ে চর জাগিয়ে পরিণত হয়েছে ফসলের মাঠে। নদ-নদীতে চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে পড়েছে কৃষক।

উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহীত ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, জিঞ্জিরাম, দশানী নদ-নদীগুলো পলি মাটি ভরাট হয়ে পানি শূন্য হয়ে পড়ায় দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট। বিলিন হয়ে যাচ্ছে নদের অস্তিত্ব। এক সময়ের খড়স্রোতা যমুনা, জিঞ্জিরাম, ব্রহ্মপুত্র এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। যমুনার বুক জুড়ে ধু ধু বালুর চর, মাইলকে মাইল জুড়ে চাষাবাদ হচ্ছে বাদাম, কাউন, চিনা, পিঁয়াজ, রসুন ও ধান ক্ষেত। ব্রহ্মপুত্র ও দশানীর তলদেশে আবাদ হচ্ছে ইরি ও বোরো ফসল।

জিঞ্জিরাম নদীতে বোরো চাষ করা হয়েছে। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

এক সময় এ নদীগুলোতে চলাচল করতো বড় লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ। নৌকায় পাল তুলে ভাটিয়ালী ও কাওয়ালি গান গেয়ে যেত মাঝি। নদী এলাকার পরিবারগুলো নৌকাযোগে বেড়াতে যেত আত্মীয়দের বাড়িতে। সে সময় ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ও পণ্য আনা নেওয়ার জন্য নদীগুলো ছিল একমাত্র ভরসা। ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রস্থল। কালের আবর্তনে নতুন প্রজন্মের কাছে এসব গল্প বলে মনে হবে। নদীতে চর জেগে উঠায় নদী পথ নির্ভর করে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর যাতায়াত ও পণ্য আনা নেওয়ার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম কয়েক কিলোমিটার এলাকা চর জেগে উঠায় নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অপরদিকে জোর যার মুল্লুক তার চরাঞ্চল দখল করে পুরো মাত্রায় ইরি, বোরো, বাদাম, চিনা, কাউন, মরিচ, বেগুন, রসুনের চাষ করছে কৃষক।

উপজেলার পাররামরামপুর ইউনিয়নের বাশঁতলি এলাকার কৃষক ছফর উদ্দিন জানান, দেড় যুগ আগে নদীগুলোতে পানি থৈ থৈ করত, ফসল আনাসহ হাটবাজার করা হতো নৌকা দিয়ে। নদীতে পাওয়া যেত বিভিন্ন রকম মাছ। এখন আর সেসবের দেখা মিলে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম নদীগুলো পানিশূন্য ও ভরাট হওয়ায় কৃষকরা চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছে।