কনওয়ের সেঞ্চুরির পর শেষ বিকেলে বাংলাদেশের স্বস্তি

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ নতুন বছরের প্রথম দিনেই মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনই ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করলেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার ডেভন কনওয়ে। কনওয়ের ১২২ রানের ইনিংসের পর শেষ বিকেলে স্বস্তি পেল বাংলাদেশ।

প্রথম দুই সেশনে ২ উইকেট শিকার করলেও, শেষ সেশনে নিউজিল্যান্ডের তিন ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশের বোলাররা। ফলে প্রথম দিন শেষে ৮৭ দশমিক ৩ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫৮ রান করেছে নিউজিল্যান্ড।

মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল হক। প্রথম তিন ওভারে সাফল্য ধরা দেয়নি বাংলাদেশ। তবে চতুর্থ ওভারেই উইকেট শিকারের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ। ওভারের তৃতীয় বলে নিউজিল্যান্ডের ওপেনার-ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম লাথামকে শিকার করেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দেয়ার আগে ১ রান করেন লাথাম।

শুরুতেই উইকেট হারানোর ক্ষত ভুলিয়ে দিতে মোটেও সময়ক্ষেপন করেননি নিউজিল্যান্ডের আরেক ওপেনার উইল ইয়ং ও কনওয়ে। উইকেটে সেট হয়ে বেশ সতর্কতার সাথে রানের চাকা ঘুড়ান ইয়ং ও কনওয়ে। তাই প্রথম সেশনে ২৭ ওভারে ১ উইকেটে ৬৬ রান তুলতে পারে নিউজিল্যান্ড।

দ্বিতীয় সেশনেরও শুরু থেকে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন ইয়ং ও কনওয়ে। ৪৭তম ওভারের প্রথম বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ইয়ং। তবে ৪৯তম ওভারের তৃতীয় বলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ১৩৫ বল খেলে ৬টি চারে ৫২ রান করা ইয়ং । কনওয়ের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন ইয়ং। । কনওয়ের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ১৩৮ রান যোগ করেন তিনি।

ইয়ং যখন আউট হন, তখন সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন কনওয়ে। চা-বিরতিতে যাওয়ার আগে নিউজিল্যান্ডের রান ছিলো ৫৪ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৭। ইনিংসের ৬৬তম ওভারের তৃতীয় বলে সেঞ্চুরি পুর্ন করেন কনওয়ে। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেতে ১৮৬ বল খেলেন তিনি।

গেল বছরের জুনে লর্ডসে অভিষেক টেস্টের প্রথম দিনই সেঞ্চুরি করেছিলেন কনওয়ে। এবার ঘরের মাঠে প্রথম খেলতে নেমে প্রথম দিনই সেঞ্চুরি করলেন তিনি। বিদেশের পর ঘরের মাঠের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনই সেঞ্চুরির করার এমন রেকর্ড বড় ফরম্যাটের ইতিহাসে নেই।

কনওয়ের সেঞ্চুরির পরের ওভারে বিদায় ঘটে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট সিরিজ খেলতে নামা রস টেইলরের। শরিফুলের বলে কভারে দারুন এক ক্যাচ নেন সাদমান ইসলাম। ৫টি চারে ৬৪ বলে ৩১ রান করেন টেইলর।

দলীয় ১৮৯ রানে টেইলর ফিরলেও, হেনরি নিকোলসকে নিয়ে দলের স্কোর ২শ অতিক্রম করান কনওয়ে। দলের মূল বোলারদের বাইরে নাজমুল হোসেন শান্ত ও অধিনায়ক মোমিনুল নিজে বল করেছেন। শান্ত না পারলেও, বাংলাদেশকে দিনের সেরা সাফল্য এনে দেন বাঁ-হাতি স্পিনার মোমিনুল। নিজের তৃতীয় ওভারেই সেঞ্চুরিম্যান কনওয়েকে বিদায় করেন মোমিনুল।

উইকেটের পেছনে লিটনকে ক্যাচ দেয়ার আগে ১৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ২২৭ বলে ১২২ রান করেন কনওয়ে। আর ৪৮ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে পঞ্চম উইকেট তুলে নেন মোমিনুল। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পচেফস্ট্রুমে সর্বশেষ টেস্ট উইকেট নিয়েছিলেন টাইগার দলনেতা।

কনওয়ের বিদায়ের পর উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলকে নিয়ে দিন শেষ করার পথেই ছিলেন নিকোলস। কিন্তু ৮৮তম ওভারের চতুর্থ বলে ১১ রানে থাকা ব্লান্ডেলকে বোল্ড করেন পেসার এবাদত হোসেন। তার আউটের পরই দিনের খেলার ইতি ঘটে। শেষ সেশনে ১১১ রানে ৩ উইকেট নেয় বাংলাদেশ।

শরিফুল ৫৩ রানে ২ উইকেট নেন। এবাদত-মোমিনুল ১টি করে শিকার করেন। উইকেটশুন্য ছিলেন তাসকিন-মিরাজ ও শান্ত।

স্কোর কার্ড : (টস-বাংলাদেশ)

নিউজিল্যান্ড ইনিংস :
টম লাথাম ক লিটন ব শরিফুল ১
উইল ইয়ং রান আউট (শান্ত/লিটন) ৫২
ডেভন কনওয়ে ক লিটন ব মোমিনুল ১২২
রস টেইলর ক সাদমান ব শরিফুল ৩১
হেনরি নিকোলস অপরাজিত ৩২
টম ব্লানডেল বোল্ড ব এবাদত ১১
অতিরিক্ত (বা-১, লে বা-৩, নো-৩, ও-২) ৯
মোট (৫ উইকেট, ৮৭ দশমিক ৩ ওভার) ২৫৮
উইকেট পতন : ১/১ (লাথাম), ২/১৩৯ (ইয়ং), ৩/১৮৯ (টেইলর), ৪/২২৭ (কনওয়ে), ৫/২৫৮ (ব্লানডেল)।

বাংলাদেশ বোলিং :
তাসকিন : ২০-৫-৬১-০ (ও-১) (নো-২),
শরিফুল : ২০-৫-৫৩-২,
এবাদত : ১৫.৩-৩-৫৩-১ (ও-১),
মিরাজ : ২৭-৭-৭২-০ (নো-১),
শান্ত : ২-০-১০-০,
মোমিনুল : ৩-০-৫-১।