দেওয়ানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখে নৌকা প্রার্থী

আজিজুর রহমান, নজরুল ইসলাম টোকন ও মাহমুদা চৌধুরী।

বিল্লাল হোসেন মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন নৌকার প্রার্থী। আগামী ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের জন্য অগ্নি পরীক্ষা হয়ে দাড়িয়েছে। চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় এখনই সকল দূরত্ব ভেদ করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার তাগিত দিয়েছে দলের নেতা কর্মীদের। উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে নির্বাচনী এলাকার মানুষের মধ্যে। প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রচারে জোরে শোরে মাঠে নেমেছেন চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থীরা। নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। কে হবেন চেয়ারম্যান তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

এবারের নির্বাচনে চুকাইবাড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী সেলিম খান, ডাংধরা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের আজিজুর রহমান, চরআমখাওয়া ইউনিয়নে নজরুল ইসলাম টোকন, হাতীভাঙ্গা ইউনিয়নে মোছা. মাহমুদা চৌধুরীকে নিয়ে চলছে অন্যরকম হিসাব নিকাশ। শেষ হিসাবে আওয়ামী লীগের এই তিন প্রার্থীর অবস্থান কী হবে তা নিয়ে চলছে জোড় আলোচনা-সমালোচনা।

ডাংধরা ইউনিয়নে ৮ জন প্রার্থী, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আজিজুর রহমান (নৌকা), বিদ্রোহী প্রার্থী শাহ মো. মাসুদ (চশমা), মতিউর রহমান (আনারস), স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সামাদ (অটোরিকশা), শফিকুল ইসলাম (ঘোড়া), মোস্তাইন মোহাম্মদ হাসান (ঢোল), আব্দুর রশিদ মন্ডল (মোটরসাইকেল) ও ইসলামি আন্দোলনের মাহবুব শাহ আকন্দ (হাতপাখা)।

চর আমখাওয়া ইউনিয়নে ৭ জন প্রার্থী, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নজরুল ইসলাম টোকন (নৌকা), জাতীয় পার্টির আব্দুল হালিম (লাঙ্গল), বিদ্রোহী জামাত আলী (চশমা), জিয়াউল ইসলাম (মোটরসাইকেল), স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ আলম (আনারস), ইসলামি আন্দোলনের দেলোয়ার হোসেন (হাতপাখা) ও মো. মাসুদ রানা (ঘোড়া)।

হাতীভাঙ্গা ইউনিয়নে ৬ জন প্রাথী, আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মোছা. মাহমুদা চৌধুরী (নৌকা), বিদ্রোহী আবুল কালাম আজাদ (মোটরসাইকেল), জুনায়েত হোসেন (আনারস), জাতীয় পার্টির ফজলুল করিম (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী তাজুল ইসলাম চৌধুরী (ঘোড়া) ও আবু হানিফ (চশমা)। তিনটি ইউনিয়নে ২১ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চুকাইবাড়ী ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন সেলিম খাঁন।

এছাড়া সকল প্রার্থীরা সমানতালে ভোটারদের কাছে ভোট টানার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিএনপি দলীয় প্রতীকে সরাসরি নির্বাচনে অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র মোড়কে নির্বাচনের মাঠে রয়েছে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরাও বসে নেই। তাই এবারের নির্বাচনে অন্যরকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে। তবে আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থীকে জেতাতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। প্রতিদিন রুটিন মাফিক নৌকার পক্ষে গণসংযোগ ও ভোটারদের কাছে ভোট চেয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীদের জেতাতে মাঠে কাজ করছেন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাও।

ইউনিয়নে আওয়াম লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে কৌতুহল বেড়েই চলছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ঠেকাতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সকল বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে এই তিন ইউনিয়নের ভোটারসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, আগামী নির্বাচনগুলোতে দলীয় প্রার্থীদের জেতাতে সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দলের ভেতর যেসব সামান্য মান-অভিমান রয়েছে তা মিটিয়ে ফেলা হচ্ছে। তবে আমরা তিনটি ইউনিয়নে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।